সম্পূর্ণ ফলে প্রচুর ফাইবার বা আঁশ থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। অন্যদিকে ফলের রসে বেশিরভাগ ফাইবার চলে যায়। এছাড়া ফলের রস বা জুস বিভিন্ন উপায়ে গ্রহণ করা হয়। এটি তৈরির সময় কোন কোন উপাদান, যেমন লবণ, চিনি, মসলা ইত্যাদি যোগ করছেন ও কতটুকু গ্রহণ করছেন, সেটির ওপর নির্ভর করে স্বাস্থ্যগত উপকারিতাণ্ডঅপকারিতা। পুরো ফল চিবানো, হজম ও শোষিত হওয়ার প্রক্রিয়ায় বেশ সময় নেয়। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরগতিতে বৃদ্ধি করে। ফলের রস চিবিয়ে খেতে হয় না ও পরিপাকতন্ত্রে প্রবেশ করে দ্রুত গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ শোষিত হয় বলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়।
পুরো ফলের চেয়ে ফলের রসে বেশি ক্যালরি থাকে। কারণ, এক গ্লাস ফলের রস তৈরি করতে বেশ কয়েকটি ফল লাগে। যদি চিনি যোগ করা হয়, তবে আরো ক্যালরি বাড়বে। এই অতিরিক্ত ক্যালরি ওজন বাড়াতে পারে।
ফলের ভেতর প্রাকৃতিক ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। জুস পান করলে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। বিশেষ করে ভিটামিন সি’র মতো পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন কমে যায়। যেমন একটি পুরো গাজরে ভিটামিন-সি ৮ মিলিগ্রাম থাকে, যেখানে একটি গাজরের রসে থাকে ২ মিলিগ্রাম।
খাওয়ার সঠিক নিয়ম : খোসাসহ বা চামড়াযুক্ত ফল খাওয়া ভালো। কারণ, ফলের চামড়ায় ফ্ল্যাভোনয়েড ও ফাইবার থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এছাড়া ফল কেটে কিছুক্ষণ বাইরে খোলা রেখে দিলে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়।
ফলের রস একবারে না গিলে চামচ দিয়ে ধীরে ধীরে খাওয়া উচিত। কারণ, লালায় যে পাচক রস থাকে, তা রসের মধ্যে থাকা চিনি হজম করতে সাহায্য করে। চিনি, লবণ, মসলা যোগ করে ফল বা জুস পান না করা ভালো।
ফল খেতে হবে দুই খাবারের মধ্যবর্তী সময়, অর্থাৎ বেলা ১১টার দিকে বা বিকাল ৪টা থেকে ৫টায়। কেননা মূল খাবারের সঙ্গে খেলে, বিশেষ করে ডায়াবেটিসের রোগীদের রক্তে গ্লুকোজ বাড়তে পারে।
সতর্কতা : ফলের অতিরিক্ত রস খেলে ওজন বাড়তে পারে। ঘন ঘন চিনিযুক্ত ফলের রস খেলে দাঁতের গহ্বর, দাঁতের এনামেল ও ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়তে পারে। অতিরিক্ত ফলের রস খেলে ফলে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা ও অ্যাসিড মুখের মধ্যে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করতে পারে।
বাইরে তৈরি ও বাজারের প্যাকেটজাত জুসের পরিবর্তে ঘরে তৈরি জুস স্বাস্থ্যসম্মত। কারণ, প্যাকেটজাত জুসে কৃত্রিম চিনি, রং, ফ্লেভার, প্রিজারভেটিভ মেশানো থাকে। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। ফলের রস খাওয়ার পরিমাণ হলো সাধারণত ৪ থেকে ৬ আউন্স বা ১২০ থেকে ১৮০ মিলি.।