দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। বিশেষ করে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা চলছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে কাজ করছে; কিন্তু বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে পারছে না। বিশেষজ্ঞ জনবলের অভাবে কমিশন কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারছে না এবং তাদের বিরুদ্ধে বেআইনি কাজ ও ব্যবসায়ীদের হয়রানির অভিযোগ উঠছে। আইন বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের জন্য প্রতিযোগিতা কমিশনের আইনগত কাঠামোর সংস্কার প্রয়োজন। গতকাল শুক্রবার তারা এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজিয়া কবির বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশন আইন ২০১২ এর ৩৭(২) ধারা বাতিল করে নতুন আইন সংস্কার জরুরি। তা না হলে জনগণের আস্থা সংকটে পড়বে। কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ এ নাসের জানান, বাজারের মূল্যবৃদ্ধির কারণ খুঁজে বের করা কমিশনের দায়িত্ব; কিন্তু সেখানে একজন অর্থনীতিবিদও নেই। তিনি মনে করেন, কমিশনকে কার্যকরভাবে কাজ করতে হলে অর্থনীতিবিদ ও আইন বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন। ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ বলেন, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কমিশনকে আইনে উল্লেখিত পদ্ধতিতে পুনর্গঠন করতে হবে। তিনি বলেন, কমিশনকে আইন মেনে কাজ করতে হবে, নইলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে ভয় পাবেন, যা বাজারে পণ্যের ঘাটতি তৈরি করবে।
তিনি আরো জানান, প্রতিযোগিতা কমিশনকে সংস্কার করে নতুন রূপে গঠনের জন্য হাইকোর্টের বিশেষ নির্দেশনা প্রয়োজন। ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন খামারিদের নিয়ে একটি সভা করে। সেখানে কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, তারা সিন্ডিকেট ভাঙতে চান এবং খামারিদের সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্রিডারস এসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, কমিশনের মামলাগুলো হ্রাস করা উচিত। সাবেক সভাপতি কাজী জাহিন হাসান বলেন, ডিমের বাজারে অনেক বিক্রেতা থাকায় সিন্ডিকেট থাকতে পারে না। তিনি জানান, বড় খামারগুলো ২০ শতাংশ ডিম উৎপাদন করে, আর বাকি ৮০ শতাংশ ছোট খামারিগুলো। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ছোট খামারগুলো ধ্বংস হওয়ায় উৎপাদন কমেছে। তিনি কমিশনকে একজন অর্থনীতিবিদ নিয়োগ দিয়ে বাজার বিশ্লেষণ করার পরামর্শ দেন।