নানকের বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন গয়েশ্বরের

প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ফেসবুক লাইভে এসে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা গণমাধ্যমে প্রচারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের কাউকে তো গ্রেফতার করা হচ্ছে না। সবাই তো আরামণ্ডআয়েশে ঘোরাফেরা করছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের পর জাহাঙ্গীর কবির নানক ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দিয়েছেন। এই বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচার কতটুকু যৌক্তিক? গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলার নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের পরিচিতি সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে এসে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন বলে দাবি করে নানক বলেন, রাষ্ট্রপতি বলেছেন- প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র কোথায়, তিনি কোনো লিখিত দেননি। তার মানে শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী। আর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ড. আসিফ নজরুল এবং তার গংরা যে সরকার গঠন করেছে এটি একটি অবৈধ, অসাংবিধানিক ও দখলদার সরকার। ওই বক্তব্যে আওয়ামী লীগের এই নেতা অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতিকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো আরেকটি ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামেরও আহ্বান জানান। তার এই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন গয়েশ্বর। ‘রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য মাসের পর মাস প্রয়োজন হয় না’ মন্তব্য করে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, রাজনীতির বাইরে যে সংস্কার আছে, সেটা কল্পনার সংস্কার। সেই সংস্কারে বাস্তবতার সঙ্গে অনেক অমিল থাকে। এই কারণে রাজনৈতিক সমস্যা রাজনীতিবিদরা সমাধান করেন। তিনি বলেন, আমরা যখন যুগপৎ আন্দোলন করেছিলাম তখন সব দলের মতামতের ভিত্তিতে সেটাকে আরো পরিমার্জিত করে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব জাতির সামনে তুলে ধরেছি। আপনারা সেই ৩১ দফা নেন। বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা আরো বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২৭ দফা রাষ্ট্র কর্মসূচি জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। কমপক্ষে ৪০টি দল একমত হয়ে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব আমরা জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিলাম। সেখানে যদি কিছু পরিমার্জন করা লাগে, সেটা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেন। রাজনৈতিক সমস্যা রাজনীতিবিদরা সমাধান করেন জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু আমরা সবাই একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে একমত হয়েছি, তাই আমরা যে সংস্কার প্রস্তাবগুলো দিয়েছি সেগুলো আপনারা দেখেন। আপনারা যারা দায়িত্ব পেয়েছেন একসঙ্গে বসে দেখেন কোন শব্দটা ভুল, কোন বানানটা ভুল। তারপর জাতির সামনে সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নারীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য একটি শক্তিশালী ফোরাম প্রয়োজন। এই ফোরাম কোনো দলীয় ফোরাম নয়। এটি স্বতন্ত্র একটি নারী ও শিশু সংগঠন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার বছরের পর বছর লাখ লাখ কোটি টাকার বাজেট দিয়ে ১৫ বছরে ১৮ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। এই টাকা দেশে ফেরত আনা প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এ নেতা আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আপনাদের মাথায় মুকুট দিয়েছি। সেটা খুলতে চাই না, আপনাদের সম্মান দিতে চাই। কিন্তু আপনারা এটা ভাববেন না কয়েকজন ছাত্র আপনাদের সরকারকে বসিয়েছে। পরিচিতি সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু এবং নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।