সেতু নির্মাণের আট বছরেও হয়নি সংযোগ সড়ক

ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আ. রাজ্জাক শেখ, খুলনা

খালের উপর সেতু তৈরি হলে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন সুয়োগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন বলে স্বপ্ন ছিল। সেই লক্ষে সরকার দীর্ঘ ৮বছর আগে ৫৪ লাখ টাকায় নির্মাণ করে সেতু।

ব্রিজ নির্মাণ হলেও দুই পাশের যাতায়াতের রাস্তা না থাকাই আরো ভোগান্তিতে পড়েছে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের বাগমারা গুপিয়ার খালের উপর শামসুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছনে আজমলের বাড়ির পাশে নির্মাণ হয় সেতু। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন করার জন্য নির্মাণের প্রকল্প ব্যয় ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫০ টাকা ধরা হয়। যা ২০১৬-১৭ সালের অর্থ বছরে শেষ হয়। নির্মাণের কাজ পেয়েছিলেন মেসার্স মিজানুর রহমান টেডার্স। তবে দীর্ঘদিনেও হয়নি সেতুটির দুপাশের সংযোগ সড়ক। আর এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নৈহাটির জাবুসা ও বাগমারা গ্রামের কয়েক হাজারো মানুষের। যে কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় যার মাধ্যমে এলাকাবাসির অনেক দিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কিন্তু সেতু নির্মাণের ৮ বছর অতিক্রম হওয়ার পরও সেতুর এপ্রোচ রোড (দুই পাশের রাস্তা) না থাকায় সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ। এলাকাবাসী জানান, সেতু নির্মাণের ফলে বাগমারা শামসুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রূপসা কলেজ ও আল আকসা মাদ্রাসাসহ আশপাশ এলাকার অল্প সময়ের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকাবাসীর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কিন্তু সেতু নির্মাণের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতুর দুই পাশের রাস্তা নির্মাণ করেনি। সেতুর দুই পাশে রয়েছে হাজার ও বাড়ি। রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অসুস্থ রোগীদের আনা নেয়া করতে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বলেও জানান। যদিও এবিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ জানান, নকশা অনুযায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুর রাস্তা নির্মাণের জন্য স্থানীয় বাসিন্দরা জমি না দেয়ার কারণে রাস্তার কাজ করা হয়নি। জানা যায়, ব্রীজটি নির্মাণ শেষ হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি জামানতের টাকাসহ সব বিল উত্তোলন করেন। অসম্পূর্ণ রয়ে যায় ব্রীজের দু’পাশের এ্যপ্রোচ রোডের কাজ। এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ব্রীজ নির্মাণ শেষ হয়েছে ৮ বছর আগে। তবে রাস্তা নির্মাণের কোনো অগ্রগতি আজও নেই। ব্রিজ নির্মাণ হলে কী হবে, রাস্তা নির্মাণ করেনি সরকার। রাস্তা না থাকায় ব্রীজে যানবাহন তো দূরের কথা মানুষ ও উঠা- নামা করতে ভোগান্তিতে পড়াতে হয়। যার কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেক মানুষের হাত-পা ভেঙেছে। রাস্তা না থাকায় অসুস্থ রোগীকে সময়মতো হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয় না। রাস্তাটি নির্মাণ হলে জাবুসা ও বাগমারা দুটি গ্রামের হাজারও মানুষ উপকৃত হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কিছু কাজ করেছেন রাস্তায়। তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অতি জরুরিভাবে রাস্তা নির্মাণের জোর দাবি জানান। শামসুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, ব্রীজের রাস্তা নির্মাণে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। মাটি না পাওয়ার কারণে রাস্তা মেরামত করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ অনেক মানুষ চলাচল করে এ রাস্তা দিয়ে। উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব বলে তিনি জানান। অন্যদিকে তৎকালীন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী মিজানুর রহমান বলেন, ব্রীজের অ্যাপ্রোচ রোডের জন্য মাটি না পাওয়ার কারণে এ অবস্থা। তবে আমাদের সিডিউল যেভাবে ছিল সেইভাবে আমরা কাজ করেছি। এ ব্যাপারে রূপসা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ বোরহান উদ্দিন বলেন, আমি আসার আগে ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্রীজের রাস্তা নির্মাণের জন্য এলাকার কেউ মাটি না দেয়ার কারণে আজ এ অবস্থা। আমার আগে যারা ছিলেন তারা অনেকবার সমাধানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু স্থানীয়রা মাটি না দেয়ার জটিলতার কারণে সম্ভব হয়নি। আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে অতি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করব।