বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিটি মামলা অত্যন্ত গুরুত্বসহ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের আইজি ময়নুল ইসলাম। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে যারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নিষ্ঠুরতম কর্মকাণ্ড করেছে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। গতকাল শনিবার রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রংপুর জেলা পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শাহাদতবরণকারী ও আহতদের সম্মানে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ময়নুল ইসলাম বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী পুলিশের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের লক্ষ্যে সরকার পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। আমরাও পুলিশে ধারাবাহিকভাবে পরিবর্তনের সূচনা করেছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে প্রথম শহীদ আবু সাঈদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আইজিপি বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে আবু সাঈদ যেভাবে দাঁড়িয়েছেন তা আজ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে স্বীকৃত। তিনি বলেন, পুলিশ মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের সূচনা করেছিল। করোনাকালে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। জনগণের প্রত্যাশিত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এআইজি ইনামুল হক সাগর জানান, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মজিদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা, বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তারা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম, শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম ও পরিবারের সদস্যরা, স্থানীয় ছাত্র সমন্বয়করা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। এর আগে গতকাল শনিবার সকালে আইজিপি রংপুর পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের বাড়িতে যান। তিনি আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও দোয়া করেন। আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। পুলিশ প্রধান রংপুর জেলা পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বেলুন উড়িয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরপিএমপি) ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন। সবশেষে তিনি রংপুর বিভাগের সব পুলিশ ইউনিটের অফিসার ও ফোর্সের সঙ্গে বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।