টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) শুধু ঘোষণা দিলে হয় না, রাষ্ট্রকেও দায়িত্ব দিলে হয় না, জবাবদিহির ব্যবস্থা রাখতে হবে। এমন মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। গতকাল রোববার বাংলাদেশের ভলেন্টারি ন্যাশনাল রিভিউ (ভিএনআর) ও নাগরিক অংশগ্রহণ শীর্ষক নাগরিক প্লাটফর্মের সংলাপে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সংলাপটির আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম। নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ও সম্মানীয় ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক (সিনিয়র সচিব) লামিয়া মোরশেদ।
আরো উপস্থিত ছিলেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম কোর গ্রুপ সদস্য ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী, রাশেদা কে চৌধুরী, অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, শাহীন আনাম প্রমুখ। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ভিএনআর এসডিজি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার অন্যতম মূল স্তম্ভ। এসডিজি শুধু ঘোষণা দিলে হয় না, রাষ্ট্রকেও দায়িত্ব দিলে হয় না, একটা জবাবদিহির ব্যবস্থা রাখতে হবে। যখন আমরা টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রায় গেলাম তখন এর অন্যতম মূল অনুষঙ্গ ছিল এই জবাবদিহির ব্যবস্থা, যেটার নাম হলো এই ভিএনআর। সম্পূর্ণ একটি পরিবর্তিত রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের ভেতরে এই অনুষ্ঠান করছি। এটি সম্পূর্ণ নতুন গুণগত পরিস্থিতি। এটি সম্পূর্ণ নতুন সুযোগ। আমরা সাধারণ মানুষের কথা শুনেছি। সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় স্বপ্রণোদিত সমীক্ষাকে জাতীয় হতে হবে। এটা পরিষ্কার হয়েছে। এই জাতীয় সমীক্ষা সরকারি হতে পারবে না। এখানে নাগরিক ও খাতের সমন্বিত প্রচেষ্টায় উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জগুলো প্রতিফলিত করতে হবে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামতকে সেখানে উত্থাপিত করতে হবে। সমীক্ষার মাধ্যমে তথ্য উপাত্তের ঘাটতি পূরণ করতে হবে। এসডিজি ডেটা ট্রেকার কোভিডের পর থেকে দুর্বল হয়ে গেছে, সেই তথ্য উপাত্তের সামগ্রিক মূল্যায়ন দেখতে চাই। তথ্য উপাত্তকে সংহত করার জন্য একটা কর্মপরিকল্পনা আসবে এটা আমরা প্রত্যাশা করি। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, টেকসই উন্নয়নের এই যে ধারা সেটি শুধু মাত্র সরকার না, এটি একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অধীনে করা হয়েছে। সেহেতু আমাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক মূল্যায়ন করার সুযোগ এসেছে। এই সুযোগ আমাদের আগে সেভাবে নেয়া হয়নি। অন্যদিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লামিয়া মোরশেদ বলেন, নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কাছ থেকে আমি পরামর্শ ও ধারণা পেয়েছি যে কীভাবে এনজিওগুলো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। কীভাবে তারা এসডিজি বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি এনজিও, ব্যক্তি খাতে যেসব বাধা ও প্রতিবন্ধকতা আছে সেগুলো আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখব। সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শোভন কর্মসংস্থান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বড় দাবি ছিল। আমরা যখন ভিএনআর করব, তখন তরুণদের দাবিগুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সেগুলোকে আন্তর্জাতিকভাবে নিয়ে যেতে হবে।