দেশে ৫০ লাখ শিশু কিডনি রোগে আক্রান্ত
প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের অন্তত ৫০ লাখ শিশু কিডনি রোগে ভুগছে। এর মধ্যে পাঁচ শতাংশ অর্থাৎ অন্তত আড়াই লাখ শিশু ক্রনিক কিডনি রোগে ভুগছে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের বহির্বিভাগের রোগীদের মধ্যে ৪ থেকে ৫ শতাংশ শিশু কিডনির সমস্যা নিয়ে আসে। গত শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে শিশুর কিডনি বিকল রোগে পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস প্রশিক্ষণে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে চিকিৎসক, নার্সদের অংশগ্রহণে পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস নিয়ে ১০টি সেশনের মাধ্যমে গতকাল রোববার শেষ হয়। সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নজরদারি না থাকায় কিডনি রোগীর সংখ্যার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে কিডনিজনিত সমস্যায় প্রায় দুই কোটি রোগী থাকতে পারে, যাদের মধ্যে ৫০ লাখ শিশু। জন্মগত সমস্যা, ডায়রিয়ার পরে অপঁঃব করফহবু ঋধরষঁৎব এবং নেফ্রাইটিসের প্রদাহ শিশুদের কিডনি রোগের প্রধান কারণ। ডায়রিয়ার কারণে শিশুর কিডনি বিকল হওয়ার শঙ্কা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ২৯ শতাংশ বেশি। প্রথম দিন বেসিক পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস, গুরুতর অকও-তে পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিসের ভূমিকা, পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস এবং ক্রনিক পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস প্রক্রিয়া এবং বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্মেলনের দুই দিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনাসহ বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। ড. শারমিন আফরোজ ও ড. শেখ ফারজানা সোনিয়ার সঞ্চালনায় সম্মেলনে কয়েকটি ধাপে আলাদা আলাদা করে ১০টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি সেশন পরিচালনা করে তিনজন করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। প্রতি সেশন শেষে সম্মেলনে অংশ নেয়াদের কাছ থেকে প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস সম্পর্কে। সম্মেলনে ভারত, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা, থাইল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলংকা থেকে অংশ নিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন- ডা. এমআর খান শিশু হাসপাতাল ও শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অ্যাকাডেমিক পরিচালক অধ্যাপক খাদিজা রহমান। এছাড়া বক্তব্য দেন- প্রশিক্ষণ কোর্সের পরিচালক অধ্যাপক আজমেরি সুলতানা, প্রশিক্ষণ কোর্সের কো-চেয়ারম্যান অধ্যাপক নব কৃষ্ণ ঘোষ, পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক আফরোজা বেগম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- চউকওউঝ ২০২৪-এর উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ হানিফ, কোর্সের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহিদুল্লাহ। প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন- ডা. এম আর খান শিশু হাসপাতাল ও শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাজমুন নাহার। সম্মেলনে ভারতের অধ্যাপক আর এন শ্রিভাস্তাভা, সিঙ্গাপুরের অধ্যাপক ইয়াপ হুই কিম, বাংলাদেশের অধ্যাপক মোহাম্মদ হানিফ, অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহিদুল্লাহ ও অধ্যাপক নাজমুন নাহারকে আজীবন সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজক ও কোর্সের পরিচালক অধ্যাপক আজমেরি সুলতানা বলেন, ‘এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য কিডনি রোগে শিশুর মৃত্যুর হার কমানো। এই প্রশিক্ষণের ফলে চিকিৎসক, নার্সরা প্রাথমিকভাবে পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিসে আরও দক্ষ হবে। এতে করে শিশুমৃত্যুর হার কমে আসবে।’