১৭ বছরেও বাড়েনি পাম্পে গ্যাসের লোড
দুর্ভোগে মালিক ও চালকরা
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সিলেট ব্যুরো
গ্যাসের চাহিদা ও গাড়ির সংখ্যা পূর্বের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়লেও সিলেটের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে বাড়েনি গ্যাসের লোড (বরাদ্দ)। সিএনজি পেট্রোল পাম্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ২০০৭ সালের লোড দিয়েই চলছে এ অঞ্চলের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো। এ অবস্থায় চরম অস্বস্তিতে রয়েছে সিএনজি পাম্পের মালিকের পাশাপাশি গাড়ির চালকেরাও। সিলেট বিভাগ সিএনজি পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুজ্জামান চৌধুরী দুলু জানান, সিলেট বিভাগে সবমিলিয়ে ৫৩টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। ২০০৭-২০২৪ অতিবাহিত হয়েছে প্রায় ১৭ বছর। এ অঞ্চলের সিএনজি পাম্পগুলো ১৭ বছর আগের চুক্তি অনুযায়ী গ্যাস বরাদ্দ পাচ্ছে। অথচ এ সময়ে গাড়ির পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৭ গুণ। আগের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ১৫ দিনের মধ্যে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোর লোড শেষ হয়ে যাচ্ছে। একটি পাম্পের লোড শেষ হলে অন্য পাম্পে গাড়ি চাপ বাড়ে। সেসব পাম্পের সামনে সৃষ্টি হয় দীর্ঘলাইনের। এ অবস্থায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় পাম্প মালিক ও চালকদের। এ বিষয়ে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে জালালাবাদ গ্যাসের একটি সূত্র জানায়, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মূলত তারা লোড বরাদ্দ দেন। লোডের অপর্যাপ্ততার বিষয়টি তারা অবহিত। বিষয়টি তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা জানান, সিলেটে পর্যটকদের প্রবাহ সাম্প্রতিককালে অনেক বেড়েছে। যে কারণে বেড়ে গেছে গ্যাসের লোড। সরেজমিন দেখা যায়, সিলেট নগরের পাঠানটুলার আহমদ গ্যাস ফিলিং স্টেশনে গ্যাসের জন্য রয়েছে তীব্র লাইন। মদিনা মার্কেট থেকে শুরু করে গ্যাস পাম্প পর্যন্ত সিএনজি-কার মাইক্রোবাসের এই দীর্ঘ লাইন। এতে করে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের এই রাস্তায় শুরু হয়েছে দীর্ঘ যানজট। যাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়েও পাচ্ছেন না গাড়ি। আর তীব্র যানজটের কারণে গাড়িও রাস্তা পেরুতে পারতেছে না। বর্তমানে এরকম লম্বা লাইন সিলেটের প্রায় প্রত্যেকটি গ্যাস পাম্পে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিভাগীয় সভাপতি জুবায়ের আহমদ চৌধুরী জানান, গ্যাস বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার চিঠি দেয়া হয়েছে। বৈঠকও করা হয়েছে। জাতীয় সংকটের দোহাই দিয়ে তারা বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। দেশের প্রায় ৭০ ভাগ গ্যাস সিলেট থেকে গ্রিডে সংযোজন হচ্ছে। কিন্তু সিলেটে গ্যাস সংকটে সিএনজি পাম্পগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে। পাম্পগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি। মাস ফুরানোর আগেই গ্যাস দেয়ার সীমা (বরাদ্দ) শেষ হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে প্রতি মাসের শেষের দিকে বন্ধ থাকছে কোনো না কোনো পাম্প। যেগুলোতে গ্যাস রয়েছে, সেখানে দীর্ঘ লাইন। এতে করে নগরজুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজটের। যার কারণে প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সিএনজি ফিলিং স্টেশন মালিক-চালক ও যাত্রীরা।