সম্প্রতি মঙ্গল গ্রহে বিস্ময়কর ‘সবুজ দাগ’ খুঁজে পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। প্রশ্ন হচ্ছে, এ দাগগুলো কীসের। বিভিন্ন অণুজীবের কার্যকলাপের ফলে এমন দাগ বা চিহ্ন দেখা যায় পৃথিবীতে। তবে নাসা সতর্ক করে বলেছে, মঙ্গল গ্রহেও ঠিক একই কারণে এমনটি ঘটেছে তা ভাবার মতো কিছুই নেই। মঙ্গলে থাকা পাথরের বিস্ময়কর ও অপ্রত্যাশিত বৈশিষ্ট্য হতে পারে এটি, যা গ্রহটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক আবিষ্কার। এ সবুজ দাগের সন্ধান মিলেছে মঙ্গলে থাকা নাসা’র পার্সিভ্যারেন্স রোভারের কাছ থেকে। ৫ সেন্টিমিটারের এই সবুজ দাগকে পাথরের রঙের ‘স্ট্রাইকিং অ্যারে’ বা আকর্ষণীয় বিন্যাস হিসেবে বর্ণনা করেছে নাসা, যা পাথরের মধ্যে তৈরি করেছে সাদা, কালো ও সবুজ রঙের ছোপ ছোপ দাগ। এই আবিষ্কারে সবচেয়ে বড় চমক ছিল প্যাচের মধ্যে পাওয়া গাঢ-সবুজ রঙের দাগ, যার আশপাশে অস্পষ্ট ও হালকাণ্ডসবুজসহ গাঢ-টোনড অংশ রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট। পৃথিবীতেও রয়েছে এমন লাল পাথর, যা পাথরের মধ্যে থাকা অক্সিডাইজড আয়ন থেকে এমন লাল রং তৈরি করে। আর এই লাল রং মানুষের রক্তের মতো বা মরিচার মতো লাল। পৃথিবীর মতো পাথরের গঠন রয়েছে মঙ্গল গ্রহেও। তবে সেই পাথরের উপর দেখা গেল এ সবুজ দাগ। মঙ্গলের পৃষ্ঠে থাকা পানি শক্ত হয়ে পাথরে পরিণত হওয়ার আগে যখন পলির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন তৈরি হয় এমন রং, যা রাসায়নিক বিক্রিয়াকে পরিবর্তন করে ও ভিন্ন ধরনের সবুজ রঙের এক রাসায়নিক উপাদান তৈরি করে। পৃথিবীতে এই প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কখনও কখনও অণুজীবও জড়িয়ে থাকে। তবে এটি অন্যান্য কারণেও ঘটতে পারে। যেমন- সালফার ও আয়রনের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার কারণে, যেখানে মাইক্রোবায়াল বা অণুজীবের প্রয়োজন পড়ে না। নাসা বলেছে, পার্সিভ্যারেন্স রোভারের কাছে অন্যান্য যন্ত্র দিয়ে এই দাগ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা ছিল না। তাই এখনও ‘রহস্য’ হিসেবেই রয়ে গেছে এই সবুজ দাগ। তবে মঙ্গল গ্রহের পাথরের এসব অপ্রত্যাশিত বৈশিষ্ট্যের খোঁজ চালিয়ে যাবে নাসা। মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির অনুমান, এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণের ইঙ্গিত খুঁজে পেতে সহায়ক হবে তাদের এই অনুসন্ধান।