অর্থ পাচারে ৩০০ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপ
প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে অর্থ পাচার ও লুটপাটের ঘটনায় প্রায় ৩০০’র অধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এসব অ্যাকাউন্টের মধ্যে এস আলম গ্রুপের সাইফুল আলম মাসুদ, বেক্সিমকোর সালমান এফ রহমান, বসুন্ধরা গ্রুপের আহমেদ আকবর সোবহান শাহ আলম এবং সামিট গ্রুপের কর্ণধার আজিজ খানসহ অনেকে রয়েছেন। অর্থ পাচারের অভিযোগে এ পর্যন্ত শতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বলছে, জব্দ করা অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের কোষাগারে জমা করা হবে। এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদরা মন্তব্য করেছেন, কেন এতদিন বিএফআইইউ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। সরকারের আর্থিক দুর্নীতি ও অর্থ পাচারকে প্রাধান্য না দেয়ার অভিযোগ তুলে অনেকেই বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ আগে নেয়া হলে অর্থনৈতিক খাতে আরো স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব হতো। বিআইবিএম’র সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী প্রশ্ন করেছেন, কেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আগের ১৫ বছরে কারও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়নি। অর্থ পাচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বিএফআইইউ কীভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘কিছু ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করলেও তা মূলত সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। আমরা আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭ মাস ধরে এই অ্যাকাউন্টগুলো জব্দ রাখতে পারি, তবে ততদিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হবে।’ আরো বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও অর্থ পাচার প্রতিরোধে ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের বিস্তারিত কাঠামো এবং বর্তমান অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনী পদক্ষেপগুলো পরবর্তীতে জানানো হবে বলে বিএফআইইউ থেকে জানানো হয়েছে। এই পদক্ষেপে অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশের মতে, ‘টাকা পাচারকারী বা পাচারকৃত অর্থ ফেরত না আনা ব্যক্তি এবং জঙ্গিবাদে অর্থায়নের অভিযোগ পাওয়া গেলে তা দ্রুত সমাধান করা জরুরি। সরকারের উচিত এসব অনিয়ম রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া।’ অর্থ পাচার ও তার প্রভাব প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় এই পদক্ষেপ যথাযথ হলেও, সময়োচিত নয়। অর্থ পাচার বন্ধের জন্য বিএফআইইউয়ের আরো স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন।