ঢাকা ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

মাচা পদ্ধতিতে পটল চাষে বাম্পার ফলন

মাচা পদ্ধতিতে পটল চাষে বাম্পার ফলন

যশোরের কেশবপুরে মাচা পদ্ধতিতে পটল চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। এই পদ্ধতিতে পটল চাষে খরচ কম, লাভ হয় বেশি। চলতি বছর বেশি দাম পেয়ে কৃষকরা খুশি। যার কারণে এই পদ্ধতিতে পটল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এলাকার কৃষকরা। উপজেলার আলতাপোল এলাকায় মাচা পদ্ধতিতে পটল চাষে ঝুঁকে পড়েছেন চাষিরা। পটল একটি প্রধান গ্রীষ্মকালীন সবজি। উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু ও উর্বর মাটি পটল চাষের জন্য উত্তম। পটল দীর্ঘমেয়াদি ফসল এবং দামও ভালো পাওয়ায় কৃষকরা দিন দিন এ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। মাঠের চারিদিকে শুধু সবুজ পটল খেত। মাচার উপরে একটির গায়ের উপর আর একটি পটল যেন পদ্ম ফুলের মতো দাঁড়িয়ে আছে। মাটি থেকে দুই-তিন ফুট উঁচুতে তার ও বাঁশের তৈরি সারি সারি মাচার উপরে নিচে ঝুলছে অসংখ্য পটল। প্রতিদিন সকাল ও বিকালে এসব পটল খেত পরিচর্যায় কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার ভোর হলেই চাষিরা খেত থেকে সপ্তাহে একদিন পটল তুলে বস্তায় ভরে ভ্যান বা অটোযোগে নিয়ে যাচ্ছেন কেশবপুর বাজারসহ আঠার মাইল বাজার, যশোর, খুলনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মোকামে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পটলের বাম্পার ফলনের পাশাপাশি দামও বেশি হওয়ায় অর্থনৈতিক মুক্তির পথ খুঁজে পেয়ে কৃষকরা দারুন খুশি। এ দৃশ্য কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল চারের মাথার বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে বিরাজ করছে। প্রতি বছর ১৫ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর মাসে পটল চাষ শুরু হয়। একবার চাষ করলে একাধারে ২-৩ বছর পর্যন্ত রাখা যায়। জীবনকাল বেশি ও রোগবালাই কম থাকায় কৃষকরা এ চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে আার্থিক ভাবে লাভবান হন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাস বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে পটলের বিভিন্ন জাত রয়েছে। লম্বা ও চিকন, খাটো ও মোটা, গাঢ় সবুজ থেকে হালকা সবুজ। ডোরাকাটা ও ডোরাকাটা বিহীন, পুরু ত্বক থেকে হালকা ত্বক। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট পটলের দুটি জাত আবিষ্কার করেছে। জাত দুটো উচ্চ ফলনশীল ও রোগবালাই সহ্য করতে পারে সেগুলো হলো ‘বারি পটল-১’ ও ‘বারি পটল-২।’ প্রতি হেক্টরে ফলন ৩০ থেকে ৩৮ টন। বারি পটল-১ আকারে ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি লম্বা, বেড় প্রায় ১.৫ ইঞ্চি। ফলের ওজন প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ গ্রাম। প্রতি গাছের সর্বোচ্চ ২৪০ টি ফল ধরে, যার মোট ওজন প্রায় ১০ কেজি। একর প্রতি ফলন ১২ হাজার ১৪৫ কেজি এবং প্রতি শতাংশে ১২০ কেজি ফলন হয়ে থাকে। এ ছাড়া বারি পটল-২ এর আকার ও বৈশিষ্ট্য ৩.৫ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা, বেড় ১.৫ থেকে ১.৭৫ ইঞ্চি হয়। প্রতিটি ফলের ওজন প্রায় ৫০ গ্রাম। প্রতি গাছে সর্বোচ্চ ৩৮০ টি ফল ধরে, যার মোট ওজন ১৪ কেজি। একর প্রতি জমিতে ১৫ হাজার ৩৮৫ কেজি এবং প্রতি শতাংশে ১৫০ কেজি ফলন হয়। তিনি আরও জানান-চলতি মৌসুমে কেশবপুরে বন্যার পানিতে তলিয়ে ৭ হাজার ৮৬৪ হেক্টর জমির অধিকাংশ বেগুন, পটল, লাউসহ বিভিন্ন সবজি খেত নষ্ট হয়ে যায়। তবে আলতাপোল চারের মাথা এলাকা অপেক্ষাকৃত উঁচু হওয়ায় বন্যার পানিতে পটলের কোনো ক্ষতি হয়নি। যে কারণে কৃষকরা লাভের আশায় দিন গুনছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত