ঢাকা ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ

সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা

সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা

দেশের বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এজন্য তাদের ৯ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব নির্দেশনার তথ্য জানানো হয়েছে। যা এরইমধ্যে সব সচিবদের কাছে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে আমন্ত্রণ এসেছে, অনুষ্ঠানের পেছনে কারা আছে। এসব বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নিতে প্রয়োজনে গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে : ১. নিজ অধিক্ষেত্রের যে কোনো অনুষ্ঠানে যোগদানের চূড়ান্ত আমন্ত্রণ গ্রহণের পূর্বে আয়োজক প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কার্যক্রম সম্পর্কে নিবিড়ভাবে তথ্য সংগ্রহপূর্বক আমন্ত্রণ চূড়ান্ত করা; ২. বিতর্ক এড়ানোর লক্ষ্যে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অন্যান্য অতিথি সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করা; কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি অনুষ্ঠানের অতিথি তালিকায় থাকলে ওই অনুষ্ঠান পরিহার করা; ৩. আয়োজিত অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র বা ব্যানার বা লিফলেট বা পতাকা বা অন্যান্য যে কোনো ছাপানো কাগজের বর্ণনা, লোগো বা স্লোগান ইত্যাদি বিষয়ে কোনো আপত্তিকর বা বিতর্ক সৃষ্টিকারী কোনো উপাদান রয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করা; ৪. অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তা গ্রহণ; ৫. নিজস্ব অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র বা ব্যানার বা চিঠি বা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন বা সাজ-সজ্জা বা সার্টিফিকেট বা ট্রফি-মেডেল বা স্যুভেনির ইত্যাদি ভালোভাবে পরীক্ষা করা; এ সব ডকুমেন্ট অথবা স্মারকে যাতে কোনো প্রকার আপত্তিকর বা বিতর্ক সৃষ্টিকারী কোনো উপাদান বা বক্তব্য না থাকে, তা নিশ্চিত করা; ৬. সরকার কর্তৃক গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে যে সব দিবস বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে, সে সব দিবস যাতে পালিত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা; ৭. সরকার কর্তৃক বাতিল ঘোষিত দিবসসমূহের পূর্ববর্তী বছরগুলোর সব স্মারক বা ক্রেস্ট বা ছবি বা স্যুভেনির ইত্যাদি সব অফিস থেকে অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; ৮. আনুষ্ঠানিক প্রতিটি সভা বা অনুষ্ঠানের জন্য লিখিত বক্তব্য প্রস্তুতপূর্বক পাঠ করা; লিখিত বক্তব্যের বাইরে কোনো কথা বা স্লোগান বা জয়ধ্বনি বা বাক্য বলা থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকা; ৯. যে কোনো প্রকারের গুজব থেকে নিজে এবং নিজ অধিক্ষেত্রের সব সহকর্মীকে দূরে রাখা। নির্দেশনার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে শীর্ষ পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা কম হওয়ায় সরকারি কর্মচারীদের সচিবালয় এবং মাঠ প্রশাসনের নেতৃত্ব দিতে হচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েকটি অনুষ্ঠানে ব্যতিক্রম ঘটনায় বিব্রত হওয়ার খবর প্রকাশ পেয়েছে। এসব সমস্যা এড়িয়ে চলতেই মূলত নয় দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর যেসব দিবস বাতিল করা হয়েছে, সেগুলো যাতে পালন না হয় তা নিশ্চিত করা। বাতিলকৃত দিবস বা ব্যক্তি সম্পর্কে থাকা বই, স্যুভেনির, ক্রেস্ট, স্মারক অফিসে থাকলে সেগুলো সরানোর জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলেছে, সব ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে লিখিত বক্তব্য প্রস্তুত করতে হবে। লিখিত বক্তব্যের বাইরে কোনো স্লোগান বা জয়ধ্বনি থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া, নিজ নিজ আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার কর্মচারীরা যাতে গুজবে বিভ্রান্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর যশোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আজহারুল ইসলামের উপস্থিতিতে একটি অনুষ্ঠানে নৃত্যের সঙ্গে বাজানো গানে পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম ছিল। ওইদিন বিষয়টিতে বিব্রত হয়ে ডিসির নির্দেশে অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট পাঁচজনকে আটক করা হয়। একপর্যায়ে আটককৃতরা আট ঘণ্টা পর মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে ছাড়া পান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত