উপদেষ্টা, রাষ্ট্রদূত (অব.) জনাব সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম এখন বাংলাদেশের আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে পরিচিত। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন ভাষাভাষী নৃ-গোষ্ঠীসহ এখানকার সকল অধিবাসীর জীবনে শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়ন ও অগ্রগতির অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার অফিস কক্ষে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা’র সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মান্যবর Ms. Nardia Simpson -এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল সৌজন্য সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) জনাব সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশে প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বিস্তারে অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করছে। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম তৈরি এবং প্রত্যন্ত এলাকায় ছাত্রছাত্রীদের জন্য হোস্টেল বিল্ডিং নির্মাণ করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম এলাকাগুলোতে পানির সংকট নিরসন, মৎস্য সম্পদ আহরণ, প্রজনন বৃদ্ধি ও সুরক্ষা বিষয়ে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে মতবিনিময় হয়েছে। উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) জনাব সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন যে, পার্বত্য জনগোষ্ঠীর জীবন মানের উন্নয়ন, তাদের জন্য গুণগত ও মানসম্পন্ন আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, কৃষিজ ও মৎস্য চাষ, সুপেয় পানি সরবরাহ, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার রক্ষা, সুশাসন নিশ্চিতকরণ, পরিবেশবান্ধব ট্যুরিজম ইত্যাদি বিষয়ে এই মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়ান সরকার ঘনিষ্টভাবে সহযোগিতা করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশকে বৈষম্যহীন করে গড়ে তুলতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি নাগরিক সমতার ভিত্তিতে যেন মিলেমিশে বসবাস করতে পারে সেজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। তিনি এ প্রসঙ্গে বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচির বিষয়ে মান্যবর ভারপ্রাপ্ত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারকে অবহিত করেন। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়ান সরকার সবসময় আমাদের পাশে থাকবে। তিনি এজন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের প্রতিনিধিগণ সরকারের গৃহীত সংস্কার কর্মসূচির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের বিবিধ বৃত্তিগুলো সম্পর্কে উপদেষ্টা মহোদয়কে অবহিত করেন। এ বিষয়ে উপদেষ্টা মহোদয় অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারকে ধন্যবাদ জানান এবং প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত বৃদ্ধির জন্য অস্ট্রেলিয়ান সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এছাড়াও মান্যবর ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে সকলকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। ঢাকাস্থ অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসের প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনাকালে এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এনডিসি, ঢাকাস্থ অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মান্যবর Ms. Nardia Simpson, ফার্স্ট সেক্রেটারি উন্নয়ন Mr. Syed Sajjad Haider, ফার্স্ট সেক্রেটারি রাজনৈতিক Ms. Lara Adams, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জেসমিন আক্তার, উপদেষ্টার একান্ত সচিব (উপসচিব) খন্দকার মুশফিকুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।