প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন, দেশে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা থাকলে গণতন্ত্র টিকে থাকত। কিন্তু গত ১৫ বছরে সেটা ছিল না। সাংবাদিকতার হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে হবে। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হবে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে খুলনা জেলার সাংবাদিকদের জন্য সংবাদ প্রতিবেদন ও বয়ানবিয়ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে সভাপ্রধানের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খুলনা সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে তিন দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছিল পিআইবি। ফারুক ওয়াসিফ বলেন, গত ১৫ বছর সাংবাদিকতা দেশ থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। যার কারণে দেশের পরিস্থিতি আমরা জানতে পারেনি। যদি সঠিক সাংবাদিকতা ও জবাবদিহিতার জায়গা থাকত, তাহলে দেশে গণতন্ত্র থাকত। কিন্তু দেশের অন্যান্য স্তম্ভের মতো গণমাধ্যমকেও দলবাজ, দুর্নীতিবাজরা গ্রাস করেছিল। যারা ক্ষমতাধরদের সঙ্গে দেশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে চারজন সাংবাদিক শহীদ হয়েছিলেন। আর আগস্টের প্রথম সপ্তাহে পাঁচজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়। গত ১৬ বছরে হত্যার শিকার হয়েছেন অন্তত ৩০ সাংবাদিক, দেড় হাজার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, নির্যাতন চালানো হয়েছিল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশীদ খান।
তিনি বলেন, সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ, সমাজের চেহারা। সাংবাদিকদের দায়িত্ব বেশি। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ দেশ, জাতি ও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের সঠিক তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। তাহলে জবাবদিহিতার জায়গা তৈরি হবে। তথ্যপ্রযুক্তির পরিবর্তনের যুগে ঘন ঘন প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি। পিআইবির প্রশিক্ষক মোহাম্মদ শাহ আলম সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সভাপতি মো. আনিসুজ্জামান ও খুলনা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল।
এ ছাড়াও বক্তব্য দেন, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আবুল হাসান হিমালয়, প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে বক্তব্য দেন দৈনিক মানবজমিনের খুলনা ব্যুরো প্রধান রাশিদুল ইসলাম, দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন, দৈনিক সংগ্রামের ব্যুরো প্রধান আব্দুর রাজ্জাক রানা, দৈনিক প্রবাহের চিফ রিপোর্টার মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, সিনিয়র রিপোর্টার খলিলুর রহমান সুমন, দৈনিক প্রবর্তনের নির্বাহী সম্পাদক কে এম জিয়াউস সাদাত, দৈনিক যুগান্তরের ব্যুরো প্রধান আহমদ মুসা রঞ্জু, দৈনিক সময়ের খবরের সিনিয়র রিপোর্টার আশরাফুল ইসলাম নূর, ঢাকা পোস্টের স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ মিলন, দৈনিক কালবেলার ব্যুরো প্রধান বশির হোসেন, দৈনিক প্রবাহের স্টাফ রিপোর্টার কামাল হোসেন, জি এম রাসেল, খুলনা গ্যাজেটের স্টাফ রিপোর্টার আয়শা আক্তার জ্যোতি, দৈনিক জনকণ্ঠের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি একরামুল হক, খুলনা গ্যাজেটের নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় খুলনার প্রতিনিধি তানভীর আহমেদ। এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন খুলনা জেলার ৩৫ জন সাংবাদিক।