কাজ চালানোর মতো ল্যাপটপও বেশ খরুচে বিনিয়োগ। এমনকি তুলনামূলকভাবে সস্তা ল্যাপটপ কিনলেও বেশিরভাগ মানুষই চাইবেন সেটি রক্ষা করতে এবং যতদিন সম্ভব ব্যবহার করতে। কীভাবে একটি ল্যাপটপ দীর্ঘস্থায়ী করা যায়, সে বিষয়ে একটি নির্দেশনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট হাও-টু গিক। চলুন জেনে নেওয়া যাক এর বিস্তারিত।
নিয়মিত পরিষ্কার করুন : এ টিপস শুনে মনে হতে পারে, এ আর এমন কী? কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই ল্যাপটপ পবা গ্যাজেট পরিষ্কার রাখতে গড়িমসি করেন। নিজেই চিন্তা করুন শেষ কবে ল্যাপটপটি ঠিকভাবে পরিষ্কার করেছেন? কিবোর্ড, বাতাস চলাচলের ভেন্ট, টাচপ্যাড ও স্ক্রিন- ল্যাপটপের এ অংশগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা দরকার। এসব অংশ পরিষ্কার না রাখলে, ল্যাপটপের ক্ষতি হতে পারে, যেমন কিবোর্ডের বোতাম কাজ নাও করতে পারে, ল্যাপটপের ভেতরের অংশ গরম হতে পারে। তাই এসব অংশে ধুলোবালি বা ময়লা জমার ফলে এর কার্যকারিতায় সাময়িক বাধা আসতে পারে। পরিষ্কার করার জন্যও সঠিক জিনিস ব্যবহার করা উচিত। যেমন স্ক্রিনের বেলায় অবশ্যই মাইক্রোফাইবার কাপড় ব্যবহার করুন। এ ছাড়া, ছোট নরম ব্রাশ ও তুলা নিশ্চিত করবে ল্যাপটপের কোন অংশে যেন আঁচড় না লাগে। বাড়িঘর পরিষ্কার করার জিনিসপত্র ব্যবহার না করে, অল্প খরচে এসব কিনে রাখাই দীর্ঘমেয়াদে ভালো ফল দিতে পারে।
ব্যাটারি খরচে নজর দিন : সাধারণত ল্যাপটপের ব্যাটারি পরিবর্তন করা সহজ হয়। তবে, এতে রয়েছে বাড়তি খরচ। এ কারণেই ব্যাটারির দিকে বিশেষ নজর রাখা উচিত। শুরুতেই, ল্যাপটপ ব্যবহারের বেশিরভাগ সময় নিশ্চিত করুন সেটি প্লাগইন করা রয়েছে। অনেকেই শুনে থাকতে পারেন ব্যাটারি সবসময় চার্জে রাখা বিপজ্জনক। বিশেষ করে ব্যাটারিতে পুরোপুরি চার্জ হওয়ার পর। এটি কিছু ক্ষেত্রে সত্যি, তবে আধুনিক ল্যাপটপগুলোতে ‘ওভারচার্জিং’ বা অরিতিক্ত চার্জ হওয়া থেকে রক্ষা করার বিশেষ ফিচার রয়েছে। ব্যাটারি পুরোপুরি চার্জ হলে বাইপাস চার্জিং ব্যবহার করুন। আসল সমস্যা হলো, মূল সমস্যা হয়, যখন ব্যাটারি সবসময় পুরো ১০০ শতাংশে চার্জ হয়ে বসে থাকে। এ কারণেই, ব্যাটারির চার্জ লিমিট সেট করার পরামর্শ দিয়েছে হাও-টু গিক। এটি ৮০ শতাংশে সেট করে রাখাই ভালো। তবে, দুর্ভাগ্যবশত এটি করার সর্বজনীন কোনো উয়াপ নেই। কোম্পানি ভেদে এ সেটিং অ্যাক্টিভেট করার উপায় ভিন্ন হতে পারে। সবশেষে, সেটিংস অপশন থেকে ব্যাটারির কর্মক্ষমতা অপটিমাইজ করতে ভুলবেন না এবং কখনই ব্যাটারি একদম শূন্য চার্জে যেতে দেবেন না। বিশেষ করে লিথিয়াম ব্যাটারিগুলো বেশিরভাগ সময় শূন্য চার্জে থাকলে দ্রুত এর মেয়াদ শেষ হতে পারে।
ল্যাপটপের বায়ুচলাচল ঠিক রাখুন : বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ল্যাপটপ ঠাণ্ডা রাখার জন্য ফ্যান ও ভেন্টিলেশন ব্যবহার করা হয়। এসব ভেন্ট দিয়ে যেন সবসময় বায়ুচলাচল করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এ কারণে, চেষ্টা করুন নিজের ল্যাপটপ সবসময় শক্ত ও সমান জায়গা, যেমন টেবল, শক্ত ফাইল বা বইয়ের ওপর রেখে ব্যবহার করতে। নরম জায়গা, যেমন বালিশ, লেপ, কম্বল, বিছানা, এমন জায়গার ওপর ল্যাযপটপ রাখলে বায়ুচলাচল বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে, যা ল্যাপটপকে গরম করে তুলবে। ক্ষেত্র বিশেষে ভেতরের বিভিন্ন অংশেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে, পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের দিকে নজর রাখুন।
নির্দিষ্ট ল্যাপটপ ব্যাগ কিনুন : ল্যাপটপের জন্য নির্দিষ্ট, বাড়তি সুরক্ষা রয়েছে এমন একটি ব্যাগ ব্যবহার করা ভালো। কারণ দুর্ঘটনা বলে কয়ে হয় না। যে কোনো সময় ব্যাগ পড়ে যেতে পারে, কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা লাগতে পারে। সাধারণ ব্যাগ ব্যবহার করলে, এসব দুর্ঘটনায় যে ল্যাপটপের ক্ষতি হবে না তার নিশ্চয়তা নেই। এ কারণেই ল্যাপটপের জন্য নির্দিষ্ট সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে এমন ল্যাপটপ ব্যাগ কেনা ভালো। এ ছাড়া, সাধারণ কাঁধে বহনযোগ্য ব্যাগ কেনার আগে দেখে নিন সেখানে সুরক্ষাওয়ালা ল্যাপটপ পকেট রয়েছে কি না। ভালো একটি ব্যাগ কিনে নিলে বিভিন্ন পরিস্থিতিতেই ল্যাপটপ রক্ষা পেতে পারে, যা ডিভাইসটিকে দীর্ঘদিন টিকে থাকতে সাহায্য করবে।