আগামীর বাংলাদেশে কেউ রাজনীতি করতে চাইলে জুলাই অভ্যুত্থান-এর শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে রাজনীতি করতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটি। জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত ও বিভিন্ন পেশার নাগরিকদের নিয়ে খুলনা ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’র মতবিনিময় সভা গত (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত হয়েছে। মতবিনিময় সভায় বক্তাদের বক্তব্যে এ কথা উঠে আসে। এ দিন বিকেল ৩টায় খুলনা মহানগরীর সাতরাস্তা বিএমএ মিলনায়তনে এই মতবিনিময় সভায় অতিথির বক্তব্য রাখেন, খুবির প্রফেসর সামিউল হক, নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির লেকচারার ইকবাল হোসেন, নজরুল গবেষক সৈয়দ আলী হাকিম।
গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। জুলাই অভ্যুথানের স্প্রিট নিয়ে বক্তব্য দেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য আইনজীবী মানজুর আল মতিন পীতম, তানজিল মাহমুদ, মেসবাহ কামাল মুন্না, অলিক মৃ। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন, আহত পরিবারের সদস্য, বিভাগের বিভিন্ন জেলার সংগঠক, আইনজীবী, ডাক্তার, শিক্ষক, আন্দোলনকারী, শ্রমিকসহ অন্যান্যরা।
এ সময়ে বক্তারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের। রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সমান মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত খুনিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। দুই হাজারের অধিক শহিদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেব না। যারা আহত কিংবা শহীদ হয়েছে, তারা এদেশের শাসক হতে চায়নি; তারা দেশের মানুষ খাদ্যের অধিকার চেয়েছে, শিক্ষার অধিকার চেয়েছে, কথা বলার ও বেঁচে থাকার অধিকার চেয়েছে। আগামীর বাংলাদেশে কেউ রাজনীতি করতে চাইলে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে রাজনীতি করতে হবে। এ সময় বক্তারা জুলাই স্প্রিটকে ধারণ ও আগামীর বৈষম্যবিরোধী নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে নাগরিক কমিটিতে যোগদানের আহ্বান জানান।
জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য তানজিল মাহমুদ বলেন, সারাদেশে যেসব ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছেন, তারা এমনি এমনি জীবন দেননি। তারা ফ্যাসিবাদমুক্ত নতুন বাংলাদেশ চেয়ে জীবন দিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার শহীদ ও আহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন করছে, আমাদের দায়িত্ব তাদের সহযোগিতা করা। এছাড়া যারা খুন করেছে, খুনের হুকুম দিয়েছে, অস্ত্র উঁচিয়ে ধরেছে, তাদের প্রত্যেককে আইনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কোনোভাবেই যেন ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া না দিতে পারে, সেজন্য আমাদের সচেতন থাকতে হবে। কেন্দ্রীয় সদস্য মেসবাহ কামাল মুন্না বলেন, ‘যারা আহত কিংবা শহীদ হয়েছেন, তারা এদেশের শাসক হতে চায়নি; তারা দেশের মানুষ খাদ্যের অধিকার চেয়েছে, শিক্ষার অধিকার চেয়েছে, কথা বলার ও বেঁচে থাকার অধিকার চেয়েছে। আগামীর বাংলাদেশে কেউ রাজনীতি করতে চাইলে জুলাই অভ্যুত্থান-এর শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে রাজনীতি করতে হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য অলিক মৃ বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে কিন্তু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার এখনও বিলোপ হয়নি। ফ্যাসিবাদ একটি সরকার নয়। এটি একটা ব্যবস্থা, যা বিভিন্ন আইন, প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক চর্চার মাধ্যমে টিকে থাকে। আমরা সেই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ চাই। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরিতে কাজ করবে নাগরিক কমিটি। মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন আহম্মদ হামীম রাহাত।