গাইবান্ধায় কৃষিভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত ধাপেরহাট ইউনিয়ন। এখানে নানা ধরনের শাক-সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। এরই মধ্যে কৃষকরা ঝুঁকছেন হলুদ চাষে। এরইমধ্যে এই হলুদ ফসল তাদের ঘুরিয়েছে ভাগ্যের চাকা। সম্প্রতি জেলার ধাপেটরহাট ইউনিয়নের দিগন্ত মাঠজুড়ে নজর কড়ছে হলুদ ক্ষেতের গাঢ় সবুজের দৃশ্য। দেখা গেছে- অধিক ফলনের সম্ভাবনা। লাভজনক এই ফসল ঘরে তোলার স্বপ্নে এখন পরিচর্যায় ব্যস্ত আছেন কৃষকরা। কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, সমতল ভূমিতে এখানকার মাটি লাল। অন্যান্য কৃষি এলাকা থেকে ভিন্নতর। উর্বর মাটি ও বন্যামুক্ত হওয়া এই এলাকায় ব্যাপক শাকসবজি উৎপাদনের পাশাপাশি হলুদই এখন প্রধান অর্থকরী ফসল। প্রত্যাশার চেয়ে লাভ বেশি থাকায় এমন কোনো কৃষক নেই যে, হলুদ আবাদ করেন না। উত্তরপাড়ার কৃষক খবির উদ্দিন বলেন, সাধারণত বৈশাখণ্ডজ্যৈষ্ঠ মাসে সারিবদ্ধভাবে হলুদ বীজ রোপণ করা হয়। এর প্রায় ৮ মাস পর ফসল ঘরে তোলা হয়। এতে বিঘায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মণ উৎপাদন হয়ে থাকে। যার হালচাষ, শ্রমিক ও অন্যান্যভাবে খরচ হয় ১৬ হাজার টাকা। ফলন ও বাজারে দাম ভালো থাকলে প্রায় ২৫ হাজার টাকা লাভ থাকে। এ বছর দেড় একর জমিতে হলুদ চাষ করেছেন বলেও জানান তিনি। হলুদ আবাদে হালকা সেচ ও গোবর-সার প্রয়োগ করতে হয়। রোগ বা পোকা আত্রমণে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। সব মিলে অন্যান্য ফসলের চেয়ে হলুদ আবাদে খরচ ও ঝুঁকি কম হওয়ায় ধাপেরহাট এলাকায় দিন দিন হলুদ আবাদ বাড়ছে বলে জানালেন- আজাহার মিয়া নামের এক কৃষক। এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, মসলা জাতীয় হলুদ সব ধরনের মাটি আবাদ করা যায়। এর মধ্যে ধাপেরহাট এলাকার মাটি অত্যন্ত উপযোগী। তাই কৃষকরা কম খরচে অধিক লাভ পাচ্ছেন হলুদ ফসলে। গাইবান্ধা কৃষি সসম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম জানান, এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে জেলায় প্রায় ৫০০ হেক্টর হলুদ আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকই ধাপেরহাট ইউনিয়নে রয়েছে। এই আবাদে অধিক লাভ রাখতে কৃষকদের সর্বাত্মভাবে সহযোগিতা করছেন। হলুদ একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। রান্নার কাজ ছাড়াও কাঁচামাল শিল্পে হলুদ ব্যবহৃত হচ্ছে। এজন্য হলুদের চাহিদা বেশি থাকায় এই আবাদ ধীরে ধীরে বাড়ছে।