তাবলিগ জামাতের দ্বন্দ্ব

যেসব দাবি জানালেন সাদপন্থিরা

প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

কাকরাইল মারকাজ মসজিদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন মাওলানা সাদের অনুসারীরা। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মাওলানা জোবায়েরপন্থিদের মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ‘দাওয়াত ও তাবলিগের ওলামায়ে কেরাম এবং সাথীগণ’-এর ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে কাকরাইল মারকাজ মসজিদের ইমাম মুফতি মুহাম্মাদ আযীমুদ্দীন বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৫ নভেম্বর সকাল থেকে কাকরাইল মারকাজে তাবলিগের মূলধারার সাথীদের আমল শুরু হবে। কিন্তু তাবলিগের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন ‘জোবায়েরপন্থিরা’ গত ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ঘোষণা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে সরকারের নিয়ম ভেঙে কাকরাইল মারকাজ মূলধারার সাথীদের কাছে হস্তান্তর না করে নিজেদের দখলে রাখার মাধ্যমে দেশে একটি অস্থিতিশীল ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্র ও সরলমনা তাবলিগের সাথীদের উসকানি দিয়ে জড়ো করছে। মুহাম্মাদ আযীমুদ্দীন আরো বলেন, গতকাল তাদের সংবাদ সম্মেলনে আমাদের বিষয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। তারা বলেছেন, কাকরাইল মারকাজ একটি ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে যার নামণ্ড ‘বাংলাদেশ তাবলিগ মারকাজ ট্রাস্ট’। মাওলানা জোবায়ের সাহেব স্বাক্ষরিত চিঠিতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, ‘দিল্লি নিজামউদ্দিন মারকাজের অনুমতিপ্রাপ্ত বাংলাদেশে ইহাই একমাত্র তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠান।

এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, এই ট্রাস্ট বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দীনের একটি শাখা। অবাক করার বিষয় হলো, ঘোষণা দিয়ে নিজামুদ্দীন বিশ্ব মারকাজ থেকে যারা নিজেদের ‘আলাদা গ্রুপ’ বলে পরিচয় দিচ্ছেন, তারা কিছু রাজনৈতিক ওলামার প্রশ্রয় ও সমর্থনে সেই নিজামুদ্দীনের মারকাজকেই দখলে নিতে চান। তিনি বলেন, কাকরাইল মারকাজ নিজামুদ্দীনের বাংলাদেশ শাখা। এর ওপর সম্পূর্ণ অধিকার বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দীনের। দেশের আইন অনুযায়ী কাকরাইল মারকাজ নিজামুদ্দীনের অনুসারীদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে- এটাই স্বাভাবিক। তবু যদি কেউ আমাদের সম্পদ এবং ন্যায্য অধিকার থেকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে- সেটা হবে তাদের জন্য অনেক বড় ভুল। এ সময় তিনি মাওলানা সাদের অনুসারীদের পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো : ১. দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহিংসতা ও পারস্পরিক উচ্ছৃঙ্খল আচরণ পরিহার করে সবার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে; ২. কাকরাইল মারকাজ সম্পূর্ণভাবে নিজামুদ্দীনের অনুসারীদের হাতে বুঝিয়ে দিতে হবে; ৩. টঙ্গী ইজতেমার বৈষম্য দূর করে এই ইজতেমায় নিজামুদ্দীনের অনুসারীদের প্রথম পর্বে ইজতেমা করতে দিতে হবে; ৪. বিশ্ব ইজতেমার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তাবলিগের বিশ্ব আমির হজরত মাওলানা সাদ সাহেবের ইজতেমায় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে; ৫. দেশের সব মসজিদে তাবলিগের শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা উভয় পক্ষের জন্য নিশ্চিত করতে হবে; ৬. উভয় পক্ষের জন্য স্থায়ীভাবে মারকাজ পরিচালনার বন্দোবস্ত করতে হবে; ৭. তাবলিগের ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন সহিংসতাপূর্ণ প্রোগ্রামে মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।