নির্বাচনকালীন মাঠ পর্যায়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পূর্ণ ক্ষমতা চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে নির্বাচনের সময় ইসি কর্মকর্তারা যেন দায়িত্ব পালনে বাধাগ্রস্ত না হন এবং কেউ যেন হস্তক্ষেপ করতে না পারেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কাছে সেই সুপারিশ করেছে ইসি। গতকাল বুধবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সংস্কার কমিশনের সঙ্গে ইসি সচিব শফিউল আজিমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল মতবিনিময় করে। পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ইসি সচিব। তিনি বলেন, একটি হাইপ্রোফাইল সংস্কার কমিশন এখানে কাজ করছে। এজন্য সম্মান বোধ করছি। আমাদের সহকর্মীরা, আমরা তাদের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি। কারণ, এটি আমাদের অঙ্গীকার। সংবিধানেরও অঙ্গীকার হলো গণপ্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। এটি নিশ্চিত করতে সংবিধানই নির্বাচন কমিশনকে দায়িত্ব দিয়েছে। ইসি সচিব আরও বলেন, সংস্কারের ক্ষেত্রে এটি মনে রাখতে হবে যে, এখানে অনেক ভালো জিনিসও আছে। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে যে দুর্বলতাগুলো আছে আমরা সেগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। মাঠের অভিজ্ঞতা থেকে গণমাধ্যমসহ অংশীজনের কী অভিজ্ঞতা আছে, আমরা সেগুলো নিয়েও আলোচনা করেছি।
‘হস্তক্ষেপ (নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে) কোথা থেকে কীভাব হয় এবং আইনগত কর্তৃত্বের বাইরে কীভাবে হস্তক্ষেপ করা হয়, এগুলো নিয়ে আমরা খোলামেলা আলোচনা করেছি। কোনো ধরনের রাখঢাক করিনি, যেন সংস্কার কার্যক্রম ফলপ্রসূ হয়। শফিউল আজিম বলেন, আলটিমেটলি মানুষের আশা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এটি নিশ্চিত করার জন্য যা যা দরকার আমরা সংস্কার কমিশনকে সেসব সুপারিশ করেছি। কমিশন সদয় হলে আমরা আমাদের সুপারিশগুলো আরও কংক্রিট আকারে দিতে পারবো।
তিনি বলেন, আমরা সুনির্দিষ্টভাব যেটা বলেছি, নির্বাচন কমিশন তো নির্বাচন একা করে না। সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রের সব অর্গান কমিশনের অধীনে কাজ করে। সংবিধান ও আইনে কমিশনকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সেটি যেন পুরোপুরি প্রয়োগ করা যায়। ইসি সচিব আরও বলেন, নির্বাচনকালীন আইনের প্রয়োগ কিন্তু পুরোপুরি হয় না। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশনাররা, নির্বাচন কর্মকর্তারা যেন কোনো কর্তৃপক্ষ দ্বারা কোনো ধরনের বাধাগ্রস্ত না হন, অন্য কেউ যেন এখানে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, আমাদের সেই সুপারিশ আছে। সংবিধানে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, সেটার যেন যথাযথ প্রয়োগ হয়।
‘আরেকটি বিষয় হলো নির্বাচনী ব্যয় ও নির্বাচন সংক্রান্ত অপরাধের বিচার যেন আরও সুনির্দিষ্টভাবে করা যায়। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে (অভিযুক্ত ব্যক্তি) যেন অন্য কোথাও চলে যেতে না পারে, সেই সুযোগ যেন না থাকে। অর্থাৎ নির্বাচনের সময় কোনো কুকর্ম করে থাকলে পরবর্তীকালে যেন বিচার করা যায়, ইসির যেন সেই ক্ষমতা থাকে, সেই সুপারিশও করেছি।
শফিউল আজিম বলেন, নির্বাচনের সময় আমাদের মিডিয়া যেন নিরপেক্ষ আচরণ করে, ভালোকে ভালো, মন্দকে যেন মন্দ বলে। এটিই আমরা আশাকরি। সবাই নিরপেক্ষ থাকলে সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব।