পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান চলমান বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৯) বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে নেপাল ও ভুটানের পরিবেশ সচিবদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। বৈঠকে পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। গতকাল আজারবাইজানের বাকুতে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৯) এ বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে এ বৈঠক হয়। বৈঠকে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বিদ্যুৎ, কৃষি, বন ও নদীক্ষেত্রে যৌথ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমরা একসঙ্গে কাজ করে সহযোগিতার কার্যকর ধাপ নির্ধারণ করতে পারি। যৌথ উদ্যোগের সম্ভাব্য ক্ষেত্র চিহ্নিত করতে বিদ্যুৎ, কৃষি, বন এবং নদীর মতো খাতগুলোর ওপর মনোযোগ দেওয়া উচিত। এ খাতগুলো জলবায়ু সহনশীলতার সঙ্গে সংযুক্ত এবং সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করে। তিনি কৃষি কোম্পানিগুলোর মিথ্যা সমাধান থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান এবং প্রকৃত অর্থে কৃষক ও সম্প্রদায়কে সহায়তা করতে টেকসই পদ্ধতিকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেন। বন সংরক্ষণ এবং এটি জলবায়ু লক্ষ্য অর্জনে ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষিত রাখতে কীভাবে ভূমিকা রাখছে তা নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উপরও তিনি গুরুত্ব দেন। বিদ্যুৎ খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং নবায়নযোগ্য শক্তি বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে নির্গমন কমানোর মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান শক্তি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এই রূপান্তর ত্বরান্বিত করতে কৌশল ও পদ্ধতি বিনিময়ের মাধ্যমে জাতীয় ও আঞ্চলিক স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানো যেতে পারে। নদীগুলো জলবায়ু অভিযোজন এবং কৃষি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি নদী ব্যবস্থাপনা, বিশেষত মূল্য সংবেদনশীল ফসল ও সম্পদ ভাগাভাগিতে ভূরাজনৈতিক বাধা মোকাবিলার জন্য যৌথ উদ্যোগের কথা বলেন। উপদেষ্টা আরো বলেন, কমিউনিটিভিত্তিক বীজ ব্যাংক ও সহনশীল ফসলের জাত তৈরির মতো উদ্ভাবনী সমাধান ভাগাভাগি করার মাধ্যমে কম বিনিয়োগে বড় সুফল আনা সম্ভব। তিনি বলেন, উদ্ভাবন ভাগাভাগির ব্যবস্থা স্থাপনের মাধ্যমে আমরা কম বিনিয়োগে সুফল বাড়াতে পারি। এসব ক্ষেত্র বাস্তবসম্মত এবং রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা কম, যা যৌথ উদ্যোগের জন্য আদর্শ। বৈঠকটি অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে টেকসই ও জলবায়ু সহনশীল উন্নয়নের জন্য পারস্পরিক সহযোগিতার অঙ্গীকারকে সুদৃঢ় করে। পরে, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কপ-২৯ এ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মন্ত্রীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন।