টারিটোপসিস ডোরনি নামের জেলিফিশ অমর জেলিফিশ হিসেবে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই ধরনের জেলিফিশে বয়সের ছাপ পড়ে না এবং এটি নিজের বার্ধক্যপ্রক্রিয়াকে বিপরীত দিকে নিয়ে যেতে পারে। এজন্য যদি জেলিফিশের অমরত্বের রহস্য উদ্ঘাটন করা যায়, তবে তা মানুষের বার্ধক্য রোধসহ ক্যান্সারের চিকিৎসায় ওষুধ আবিষ্কারের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, এমন ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, স্বাভাবিক অবস্থায় এই জেলিফিশের জীবনচক্র অন্যান্য জেলিফিশের মতোই হয়। এটি একটি লার্ভা হিসেবে জীবন শুরু করে, পরে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়ে একটি প্রাপ্তবয়স্ক জেলিফিশে পরিণত হয়। তবে, পরিবেশগত চাপ বা শারীরিক ক্ষতির মুখোমুখি হলে এই জেলিফিশ তার জীবনচক্রকে আগের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। এটি নিজের ইচ্ছায় প্রাপ্তবয়স্ক কোষকে রূপান্তরিত করতে পারে, এই রূপান্তরপ্রক্রিয়াটি ট্রান্সডিফারেনশিয়েশন নামে পরিচিত। এই প্রক্রিয়ায় জেলিফিশের বিশেষ কোষ বিশেষায়িত কোষে রূপান্তরিত হয়, যা পরে নতুন ধরনের কোষে পরিবর্তিত হতে পারে এবং জীবনচক্র আবার শুরু করতে পারে। তাত্ত্বিকভাবে টারিটোপসিস ডোরনি জেলিফিশের কোষের বৃদ্ধির চক্রটি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে পারে। আর তাই জেলিফিশটির মধ্যে বার্ধক্য আসে না। এই জেলিফিশের কথা প্রথম ১৮৮৩ সালে প্রকাশ করেন বিজ্ঞানীরা। ভূমধ্যসাগরে আবিষ্কৃত এই জেলিফিশ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন মহাসাগরে পাওয়া যায়। জেলিফিশের এমন অমরত্বের রহস্য উদ্ঘাটন করতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা।