তাজরীন ট্র্যাজেডির এক যুগ পূর্তিতে মোমবাতি প্রজ্বলন করে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নিহতদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতিসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর এলাকার তাজরীন ফ্যাশনের সামনে মোমবাতি প্রজ্বলন করে নিহতদের স্মরণ করা হয়। এ সময় আহত শ্রমিকরা জানান, তাজরীন ফ্যাশনের আগুনে যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। আহত ও নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি। যারা বেঁচে আছেন তারা মরার মতো বেঁচে আছেন। তাদের সন্তানরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন। আহত শ্রমিকরা ঠিক মতো দু-বেলা খেতে পারছেন না। সন্তানের লেখাপড়ার খরচ অভাবে তাদের সন্তানরা কিশোর বয়সেই সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হয়েছে। আমরা আহতদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা, পুনর্বাসনসহ নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানাই। শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলেন, পোশাক খাতে শ্রমিকদের জীবন এভাবে যেন ঝড়ে না যায়, সেদিকে যত্নবান হতে হবে। দোষীদের আইনের আওতায় আনলে পোশাক খাতে এমন দুর্ঘটনা ঘটতো না। আমরা জানি, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরীনের আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়েছেন ১১৭ জন ও আহত হয়েছেন অন্তত দুই শতাধিক শ্রমিক। তাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমরা চাই প্রতিটা আহত শ্রমিক ও নিহতের পরিবার যেন তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পায়। তারা যেন আন্তর্জাতিক মানের ক্ষতিপূরণ পান এই দাবি জানাই। এছাড়া তাজরীনের পরিত্যক্ত ভবনটি সংস্কার করে দ্রুত শ্রমিকদের জন্য একটি হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জানাই। যেখানে সকল শ্রমিকের বিনা খরচে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে অগ্নিকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন নেতাকর্মীরা। সব শেষে নিহতদের মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল ও নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এসময় বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশন, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।