উৎপাদন খরচ বেশি এবং বাজার মূল্য কম থাকায় সারাদেশে ব্যাহত হচ্ছে চায়ের উৎপাদন। পাশাপাশি চা চাষের এলাকা বৃদ্ধি না পাওয়া, সিন্ডিকেটিং এবং পোকার আক্রমণের কারণে এ শিল্প ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। গতকাল রোববার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ‘টেকসই চা উৎপাদনের জন্য খরা এবং রেড স্পাইডার মাইট সহনশীল চা ক্লোন নির্বাচন’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সিকৃবির ভেটেরিনারি, এনিম্যাল ও বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস অনুষদের সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সিকৃবির কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মালেকের সঞ্চালনায় এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (সাউরেস) এর পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুব ইকবালের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন-সিকৃবি ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম। বাংলাদেশের ১৬ কোটির বেশি মানুষ চা পান করে উল্লেখ করে ভিসি আলিমুল ইসলাম বলেন, চা কে একটি জাতীয় ফসল হিসেবে গুরুত্ব দিতে হবে। সিলেট অঞ্চলে চা কে একক ফসল হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। এর মাধ্যমে বিদেশে চা রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। তিনি আরো বলেন, সিলেট অঞ্চলের চা বাগানের জন্য খরা, পোকামাকড় ও রোগবালাই সহনশীল চা ক্লোন উদ্ভাবনের মাধ্যমে চায়ের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে চা শিল্পকে দেশীয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি রপ্তানিমুখী করা যায়। সিলেট অঞ্চলে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে মডেল ভিলেজ তৈরির মাধ্যমে গবেষণার ক্ষেত্র বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন ভিসি। প্রকল্পের সহযোগী গবেষক ও কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মালেকের সঞ্চালনায় কর্মশালায় ‘টেকসই চা উৎপাদনের জন্য খরা এবং রেড স্পাইডার মাইট সহনশীল চা ক্লোন নির্বাচন’ শীর্ষক ৩ বছর মেয়াদি প্রকল্পের সমাপনী প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক এবং সিকৃবি’র ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান ও চা উৎপাদন প্রযুক্তি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. এএফএম সাইফুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, এ দেশের আবহাওয়ায় অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত খরার কারণে চায়ের উৎপাদন অনেকাংশে হ্রাস পায়। তিনি আরো জানান, গবেষণায় খরা এবং রেড স্পাইডার মাইট সহনশীল কয়েকটি ক্লোন নির্বাচন করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে গবেষণাটির ফলাফল অধিকতর নির্ভরযোগ্য করতে গবেষণার কার্যক্রম চলমান রাখা আবশ্যক। কর্মশালায় কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. নাথু রাম সরকার, পরিচালক (শস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ) ড. মো. আক্কাস আলী, সিনিয়র স্পেশালিষ্ট (জলবায়ু ও প্রাকৃতিক সম্পদ) ড. মো. মনোওয়ার করিম খান, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ড. মাইনউদ্দীন আহমেদ প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা আরো বলেন, চা একটি সস্তা পানীয়। চা শিল্পকে আরো প্রমোট করতে হবে। বাংলাদেশে চায়ের প্রিমিয়ার কাস্টমার রয়েছে বলে জানান তিনি।