সুসংবাদ প্রতিদিন

বাদাম চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন জেসমিন

প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আরিফুর রশীদ, লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে চিনা বাদাম চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন জেসমিন আক্তার নামের এক নারী। তিন মাস আগে লাগানো বাদাম এখন ঘরে তুলছেন তিনি। বাড়ির পাশের জমিতে ধান চাষ না করে কয়েক বছর ধরে বাদাম চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন কৃষিতে নারী উদ্যোক্তা জেসমিন। জেসমিন আক্তার উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের পূর্ব চলবলা সতীরপাড় এলাকার ওছমান গণির মেয়ে। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, জেমসিন আক্তার ৩০ শতাংশ জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে বীজসহ ১৫ হাজার টাকা। প্রতিবছর তিনি বাড়ির পাশে উঁচু জমিতে বাদাম চাষ করেন। পুরুষ চাষিদের সাথে পাল্লা দিয়ে একজন নারী হয়ে তিনি গত ৫ বছর ধরে বাদাম, ভুট্টা ও ধান সহ সাথী ফসল চাষাবাদ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। জীবন-যুদ্ধে তিনি একজন সংগ্রামী নারী। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় জেসমিন আক্তারের বাদামের ফলন ভালো হবে আশা করছেন। জেসমিন আক্তার বলেন, আমার স্বামী একজন প্রবাসী। আমি বসে না থেকে কৃষিকাজ করছি। এতে পরিবারে বাড়তি আয় হচ্ছে। দুই সস্তানের পড়াশোনার খরচ হচ্ছে। প্রবাসে থেকেও আমার স্বামী সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে কৃষিকাজে। ছোট বেলা থেকেই কৃষিকাজ আমার ভালো লাগে। শখের বসে অনেক ধরনের শাকসবজি আবাদ করতে করতে এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এ বছর বাদামের পাশাপাশি ফুল কপি, পেঁয়াজ, রসুন, তিলসহ বেশ কিছু সবজি চাষাবাদ করেছি। এখন ক্ষেত থেকে বাদাম তোলা শুরু করেছি।

গত বছর বাদাম ১৩ হাজার টাকা মণ বিক্রি করেছি। আমাদের এলাকায় বাদাম চাষ কম হয় তাই এবার দাম মোটামুটি ভালো হবে আশা করছি। বাদাম তোলা শেষ হলে ভূট্টা চাষ করবো এই ক্ষেতে। তিনি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষিকাজের সব ধরনের সহযোগিতা কামনা করছেন। স্থানীয় বাবুল আশী জানান, জেসমিন একজন পরিশ্রমী নারী। তিনি জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলান। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফসলের মাঠে সময় দেন। কৃষিকাজে শ্রমিক নেন পাশাপাশি সে নিজে কাজ করে। কৃষি কাজের পাশাপাশি হাঁস-মুরগি ও ছাগল লালনপালন করে সফল হয়েছে জেসমিন। এভাবেই একজন নারী হয়েও মাঠে ময়দানে লড়াই সংগ্রাম করেই যাচ্ছেন তিনি। তার এধরনের কার্যক্রম দেখে এলাকার অনেক নারী উদ্বুদ্ধ হচ্ছে কৃষি কাজে।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় জানায়, জেসমিন আক্তারের মতো নারীরা কৃষি কাজে এগিয়ে আসলে কৃষিতে আমূল পরিবর্তন আসবে। সেই সাথে কৃষিপ্রধান দেশ হিসাবে নারীদের যেমন কৃষির উপর আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, অন্যদিকে বাড়বে কৃষি উৎপাদনশীলতাও। কৃষি বিভাগ থেকে তাকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। মাঠপর্যায়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।