ঢাকা ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বাঘিনীদের থাবায় ক্ষতবিক্ষত আইরিশরা

বাঘিনীদের থাবায় ক্ষতবিক্ষত আইরিশরা

বাংলাদেশের বাঘিনীদের গর্জনে রীতিমতো ধরাশয়ী আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল। প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের মেয়েরা করেছিল নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে তারা পায় রেকর্ড ব্যবধানে জয়। তৃতীয় ওয়ানডে জিতে আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করেছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। গতকাল সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সফরকারীদের ৭ উইকেটে হারিয়েছে টাইগ্রেসরা। এই জয়ে আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার পথটা তৈরি করে রাখল লাল সবুজের মেয়েরা। সরাসরি বিশ্বকাপে অংশ নিতে হলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ ছয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। নিজেদের সুবিধাজনক জায়গায় রাখতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তিনটি ম্যাচে জিততেই হতো। পরিকল্পনা মতো আইরিশদের গুঁড়িয়ে দিয়ে তিন ম্যাচই জিতেছে বাংলাদেশ। যদিও এখনও নিগার সুলতানা জ্যোতির দলের বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়নি। আগামী বছরের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের একটি ম্যাচ জিতলেই সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়ে যাবে তারা। ওই সিরিজের আগে আইরিশদের হারিয়ে নিজেদের কাজটা এগিয়ে রেখেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করে ১৮৫ রানে অলআউট হয়ে যায় আইরিশরা। জবাবে ৩৭.৩ ওভারে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। এক বছরেরও বেশি সময় পর ফিরে প্রথম ওয়ানডেতে আক্ষেপ নিয়েই মাঠ ছেড়েছিলেন সুপ্তা। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটা পেয়েও পাননি। মিস করেছিলেন চার রানের জন্য। এদিন যেভাবে ব্যাট করছিলেন তাতে মনে হয়েছিল প্রথম দিনের আক্ষেপ ঘোচাতে পারবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত ৭২ রানে বিদায় নেন এই ওপেনার। ৮৮ বলের ইনিংসে ১১টি চার মারেন তিনি। লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় ৯ রানেই ওপেনার মুর্শিদা খাতুনকে হারায় তারা। তবে ফারজানার সঙ্গে সুপ্তার ১৪৩ রানের জুটিই জয়ের ভিত গড়ে দেয়। যা মেয়েদের ক্রিকেটে বাংলাদেশের যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি। এর আগে ২০১৭ সালে রুমানা আহমেদ ও শারমিন সুপ্তা গড়া ১২৭ রানের জুটি ছিল সর্বোচ্চ। দলীয় ১৫২ রানে সুপ্তাকে বিদায় করে এ জুটি ভাঙেন অ্যামি মাগুয়েইর। এরপর দ্রুত ফিরে যান ফারজানাও। তাকেও ফেরান মাগুয়েইর। আউট হওয়ার আগে ৬১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ৯৯ বলের ইনিংসটি সাজান ৬টি চারের সাহায্যে। দুই সেট ব্যাটারকে হারালে বাকি কাজ সোবহানা মোস্তারিকে নিয়ে শেষ করেন জ্যোতি।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৯ রানে ওপেনার সারাহ ফোর্বসকে তুলে নেন সুলতানা খাতুন। এরপর এমি হান্টারকে নিয়ে ৪৮ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন অধিনায়ক গ্যাবি লুইস। হান্টারকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন রাবেয়া খান। ২৩ রান আসে হান্টারের ব্যাট থেকে। এমির বিদায়ের পর ওরলা প্রেডারগাস্টকে নিয়ে ছুটেন গ্যাবি। তবে তাদের গতি ছিলো অতি মন্থর। ২৯তম ওভারে ব্যক্তিগত ৫২ রানে ফাহিমা খাতুনের বলে গ্যাবির বিদায়ে ৪০ রানের এই জুটি যখন ভাঙে স্কোরবোর্ডে তখন কেবল ৯৭ রান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রান করতে লেগেছে তার ৭৯ বল। ওরলা করেন ২৭ রান। এরপর তাদের একাধিক ব্যাটার থিতু হলেও রানের গতি বাড়াতে পারেননি, এক পর্যায়ে রানরেট বাড়ানোর চাপে ঝুঁকি নিতে গিয়ে একে একে ফিরে যান তারা। আরলিন কেলি (১৮), এলানা ডালজেল (১৯) ও কারা সার্জেন্ট (১৩) সেট হলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সাফল্য পেয়েছেন কম বেশি সবাই। ১০ ওভারে ৪৩ রানের খরচায় ৩ উইকেট নিয়ে তাদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ফাহিমা। সুলতানা ও নাহিদার শিকার দুটি করে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত