সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেফতার ইস্যুতে একাধিক বিষয় সামনে এসেছে। সেগুলো ধর্মীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরির পেছনে অন্যতম কারণ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ভুল তথ্য দর্শকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। যার ফলে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পাশাপাশি একটি সংগঠনের নামেও। আর এতে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে সবচেয়ে ভুল বোঝাবুঝির জায়গায় পতিত হচ্ছে বাংলাদেশ। প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে ইসকনও। গত রোববার দ্য উইক ম্যাগাজিন ইন্ডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন ইসকনের কেন্দ্রীয় আধ্যাত্মিক নেতা ও মুখপাত্র দেবশঙ্কর বিষ্ণু দাস। চিন্ময়ের পরিচয় নিয়ে প্রচলিত একটি ধারণার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাও দেন দেবশঙ্কর। তিনিও জানান, চিন্ময় প্রায় ৬ মাস আগে ইসকন থেকে বহিষ্কৃত হন। পরবর্তীতে নিজের সংগঠনের প্রতিই মনোযোগী ছিলেন। তাই যে ব্যক্তি একটি শান্তিপ্রিয় ধর্মীয় সংগঠন থেকে বিতাড়িত, তার সম্পর্কে তথ্য প্রচারে ‘ইসকন’ শব্দটা ব্যবহার না করার দিকেই দৃষ্টিপাত করেন দেবশঙ্কর। এতে ১১০টি দেশে শান্তির পক্ষে কাজ করা ইসকনের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ আনেন তিনি। চট্টগ্রামে চিন্ময়ের পক্ষে এক আইনজীবী লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিলে, তিনি বাধার মুখে পড়েন- এমন কিছু তথ্য চাউর হয়েছে বলে জিজ্ঞাসা করা হলে দেবশঙ্কর জানান, এটি সঠিক নয়। যারা এ ধরনের তথ্য প্রচার করেছে তারা ভুল বার্তা দিয়েছে। শুধু চিন্ময়ই নয়, যে কোনো মানুষ তা যে ধর্ম-বর্ণের হোক, তার আইনের মাধ্যমে সঠিক বিচার পাওয়ার পক্ষে কথা বলেন দেবশঙ্কর। তবে যেহেতু চিন্ময় দাস ইসকনের সদস্য নন, তাই ইসকনের কাছ থেকে তিনি সাহায্যপ্রার্থী হতে পারেন না বলেও মনে করেন ইসকনের এ মুখপাত্র।
এ সময় বাংলাদেশে ইসকনের যাত্রা ও কর্মকাণ্ডে জোরপূর্বক কোনো শিথিলতা আনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে দেবশঙ্কর জানান, এটা হাস্যকর।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে শুরু করে সেখানকার কেউ এক্ষেত্রে কোনো বাধা দেয়নি। ১৪০টি সেন্টারে তারা আগের মতোই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে বৈশ্বিক হিন্দু সম্প্রদায়ের করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বদৌলতে এখন অপতথ্য খুব দ্রুত ছড়ায়। তবে মূলধারার গণমাধ্যমকে খবর বা তথ্য প্রচারে আরো সতর্ক থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ইসকনের এই কেন্দ্রীয় নেতা।
এ সময় কিছু মানুষ ইচ্ছা করেই গুজব তৈরি করছে বলেও অভিযোগ আনেন তিনি। প্রতিটি দেশের অভ্যন্তরীণ নিজস্ব আইন আছে উল্লেখ করে দেবশঙ্কর জানান, আমরা নিয়মগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই বৈশ্বিক হিন্দু সম্প্রদায়কে এ বিষয়কে মনে রাখতে অনুরোধ করেন তিনি।