রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে আসাদ

* আসাদের পতন নিয়ে যা বললেন বাইডেন

প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সিরিয়া থেকে পালিয়ে বাশার আল-আসাদ পরিবার নিয়ে রাশিয়ার মস্কোয় পৌঁছেছেন। তাকে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গত রোববার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সংস্থা ক্রেমলিনের সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনেও বলা হয়, আসাদ ও তার পরিবারকে রাশিয়া আশ্রয় দিয়েছে। এর আগে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক দখল করে ‘মুক্ত’ ঘোষণা করেন বিদ্রোহীরা। গত রোববার তারা দামেস্ক দখল করে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের ঘোষণা দিয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিদ্রোহীরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘অত্যাচারী বাশার আল-আসাদ পালিয়ে গেছেন। আমরা দামেস্ককে অত্যাচারী বাশার আল-আসাদের হাত থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি।’ বিদ্রোহীদের তোপের মুখে দেশ ছেড়ে ইরাক পালাচ্ছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সেনাবাহিনী। এর মাধ্যমে প্রায় দুই দশক ধরে চলা সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হয়। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তার অবস্থান নিয়ে নানা গুঞ্জন দেখা দেয়। অবশেষে তার অবস্থানের কথা জানা গেল।

সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের কাছে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেন এটিকে সিরিয়ানদের জন্য ঐতিহাসিক সুযোগ বলে অভিহিত করেছেন। একইসঙ্গে আসাদের বিচারও চেয়েছেন তিনি। খবর বার্তাসংস্থা এএফপির।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ‘জবাবদিহিতার আওতায়’ আনা উচিত বলে রোববার মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একইসঙ্গে তিনি এই রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দেশ পুনর্গঠনের জন্য সিরিয়ানদের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ হিসেবেও বর্ণনা করেছেন।

মূলত বিদ্রোহী নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জাওলানির নেতৃত্বে অভিযান শুরু হওয়ার পর নভেম্বরের শেষ দিকে এই বিদ্রোহীরা হুট করে সিরিয়ার আলেপ্পো শহর দখল করে নেয়। এর দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে দেশটিতে সরকারের পতন হলো।

আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে এই হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছে ইসলামপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। এ সংগঠনটির সিরিয়ার ইতিহাস ও সংকটে জড়িত থাকার দীর্ঘ ইতিহাস আছে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং তুরস্কসহ অনেক দেশে এইচটিএস সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত। এদিকে ইসলামপন্থিদের নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের জোটের হাতে আসাদের পতনের পর রোববার যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম পূর্ণ প্রতিক্রিয়ায় বাইডেন হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আবির্ভাব যেন না হয়, সে ব্যাপারে ওয়াশিংটন সজাগ থাকবে। হোয়াইট হাউজ থেকে বক্তব্য দেয়ার সময় প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, সরকারের পতন একটি মৌলিক ন্যায়বিচারের কাজ ছিল। সিরীয় জনগণ, যারা অনেক দুর্ভোগ সহ্য করেছে, তাদের জন্য এটা এক ঐতিহাসিক সুযোগ।’ ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের কী হওয়া উচিত, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, আসাদকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ওয়াশিংটন সিরিয়ানদের পুনর্গঠনের জন্য সহায়তা করবে। তিনি বলেন, আমরা জাতিসংঘের প্রক্রিয়ার মধ্যে আসাদ সরকার থেকে দূরে নতুন সংবিধানসহ একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম সিরিয়া গড়ার লক্ষ্যে সব সিরীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখব। তবে বাইডেন হুঁশিয়ারি দেন, বিজয়ী জোটের মধ্যে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীগুলোর ওপর নজর রাখা হবে।