দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন দেশটির দুর্নীতি তদন্ত ব্যুরোর প্রধান প্রসিকিউটর। এছাড়া ইওল প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও একই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার পার্লামেন্টের শুনানিতে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্ত কার্যালয়ের প্রধান ওহ ডং-উন বলেন, তিনি ইউনের বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছেন। বিচার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বে সাং-আপ পার্লামেন্ট কমিটিকে বলেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আদেশ কার্যকর করা হয়েছে। এর আগে গত রোববার ক্ষমতাসীন দল পিপিপির প্রধান হান ডং হুন জানান, পদত্যাগের আগে কূটনীতিসহ রাষ্ট্রীয় কোনো বিষয়ে জড়িত থাকতে পারবেন না ইওল। তবে, পিপিপি প্রধানকে এমন কথা বলার ক্ষমতা দেওয়া হয়নি বলে সমালোচনা করেছে বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। শনিবার অভিশংসন থেকে রক্ষা পান প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা পার্লামেন্টের অধিবেশন বয়কট করলে বেঁচে যান তিনি। গত সপ্তাহে জরুরিভিত্তিতে সামরিক আইন জারি করে বিতর্ক ও সমালোচনার মুখে পড়েন প্রেসিডেন্ট ইওল। এর আগে, ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে’ সমূলে উৎপাটনের কথা বলে হঠাৎ করেই সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন ইওল। তার এ ঘোষণায় স্তম্ভিত হয়ে যায় পুরো দক্ষিণ কোরিয়া। তবে সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও ইওলের ‘অপ্রত্যাশিত’ এই ঘোষণায় দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। ১৯৮০-এর দশকের পর দেশটির জনগণ এমন পরিস্থিতি দেখেনি। সামরিক আইন জারির ঘোষণায় তীব্র তোপের মুখে পড়েন ইউন সুক ইওল। প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দেশটিতে। এদিকে, সামরিক আইন জারির জন্য জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ইওল। তিনি বলেছেন, তার রাজনৈতিক ও আইনি ভাগ্য তিনি নিজের ক্ষমতাসীন পিপলস পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) কাছে ছেড়ে দিচ্ছেন। তবে ইওল এখনো প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। গতকাল সোমবার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইওল এখনো আইনত কমান্ডার ইন চিফ, কিন্তু তার বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিরোধিতা তার ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।