পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আগামী বছর পহেলা বৈশাখে নদ-নদীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। গতকাল ঢাকায় পানি ভবনের মাল্টিপারপাস হলরুমে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের নদ-নদীর সংখ্যা নির্ধারণবিষয়ক এক অবহিতকরণ সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। পাশাপাশি ৩ মাসের মধ্যে সব জেলার খালের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন উপদেষ্টা। উপদেষ্টা বলেন, নদ-নদীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় একইসঙ্গে ভূমি মন্ত্রণালয়কেও যুক্ত করা হবে। মৃত নদী বলতে কোনও নদী নেই, প্রবাহহীন বলতে পারেন। প্রবাহহীন নদীকে প্রবহমান করার অনেক প্রক্রিয়া বা রাস্তা আছে। মৃত নদী দেখিয়ে নদীর জায়গা ইজারা বা লিজ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা কিন্তু হাওরের তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলেছি, আমরা বিলেরও একটা তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলেছি। পরবর্তী কাজ হচ্ছে খালের তালিকা চূড়ান্ত করা। অবহিতকরণ সেমিনারে ভাচ্যুয়ালি যুক্ত থাকা সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের আগামী ৩ মাসের মধ্যে জেলার সব খালের তালিকা রেকর্ড অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য উপদেষ্টা নির্দেশনা দেন। ঢাকার চারপাশে থাকা বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও শীতলক্ষ্যা নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত করার একটা বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা করে কাজ শুরু করার জন্য উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। তিনি আরও বলেন, ঢাকার ভেতরে থাকা ২১টি খাল দখল ও দূষণমুক্ত করে একটা ব্লু নেটওয়ার্ক করার পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি এবং এটির বাস্তবায়ন কাজ দ্রুতই শুরু করা হবে। দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত করার কাজ আমরা অচিরেই শুরু করে দেবো। সেমিনারে অতিথির বক্তব্যে নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশ নদীবিধৌত দেশ। এ দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নদ-নদীর ওপর নির্ভরশীল। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য উন্নয়নের নামে নদ-নদী খালবিল দখল করা হয়েছে। নদীকে বাঁচাতে হলে দূষণ ও অবৈধ দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করতে হবে। নদী বাঁচানোর এখনই উপযুক্ত সময়। অন্য সময় করতে হলে স্বার্থের সংঘাত শুরু হবে। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞাসহ আরো অনেকে।