গাজীপুরের টঙ্গীতে তাবলিগ জামাতের জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মাঝে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সাদপন্থিদের ৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতরা হলেন- বশির আহমেদ (৫২), মাওলানা আতাউর রহমান (৫০) হাজী মনির উদ্দিন (৪২) ও রেজা আরিফ (৪৫)। আহতদের উত্তরা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে টঙ্গী ইজতেমা মাঠের বাহিরে স্টেশন রোড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিকে, ঘটনার পর মাওলানা জুবায়ের অনুসারী কয়েকশ উত্তেজিত মুসল্লি লাঠিসোঁটা নিয়ে দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে মহাসড়কের উভয়-পাশ ও টঙ্গী-কামারপাড়া রোডে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ এসে জুবায়ের অনুসারীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। নিজামুদ্দিন মার্কাজ (সাদণ্ডপন্থী) অনুসারীদের দাবি, আগামী ২০ ডিসেম্বর জোড় ইজতেমার বিষয়ে প্রশাসনের আমন্ত্রণে তারা এখানে আসেন। সেখানে তারা বাধার সম্মুখীন হন। তারা আরো বলেন, সুরায়ে নেজাম (যুবায়ের পন্থী) টঙ্গীতে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা করলেও আমাদের সেটা করতে দেয়া হয়নি। আমরা জোড় ইজতেমা করার জন্য ময়দানে প্রবেশ করতে চাইলে আমাদের তারা বাধা দেয় এবং হামলা চালায়। মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারী বিশ্ব ইজতেমার সমন্বয়ক মো. সায়েম জানান, আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের ৫ দিনের জোড় ইজতেমার বিষয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মিটিং শেষ করে দুপুরে বশির আহমেদ, মাওলানা আতাউর রহমান, হাজী মনির উদ্দিন ও রেজা আরিফসহ একটি প্রতিনিধিদল গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে (অপরাধ দক্ষিণ) দেখা করে কামারপাড়ার দিকে যাচ্ছিলেন।
এ সময় পুলিশ-বক্সের সামনের তাদের বহনকারী গাড়িতে (ঢাকা মেট্রো চণ্ড১২-৩৬৯৯) হামলা করে জুবায়েরপন্থিরা। উত্তেজিত মুসল্লিরা তাদের এলোপাথাড়ি মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে। পরে আশপাশের লোকজন আহতদের উদ্ধার করে উত্তরা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মাওলানা জুবায়ের অনুসারী তাবলিগের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমার নিয়ে তাবলিগের বিবাদমান দুই আয়োজক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। এরই মধ্যে জুবায়েরপন্থিরা তাদের জোড় ইজতেমা সম্পন্ন করেছে। আগামী ২০ ডিসেম্বর সাদণ্ডপন্থিদের জোড় ইজতেমা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এই অবস্থায় জুবায়েরপন্থিরা ময়দান না ছাড়ায় সাদণ্ডপন্থিরা ময়দানে আসতে পারছে না।