ঢাকা ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের টাকা কোথায় গেল

শ্বেতপত্র প্রকাশের আহ্বান
শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের টাকা কোথায় গেল

বিগত সরকারের নেয়া শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের শ্বেতপত্র প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন শ্রম সংস্কার কমিশনের সভাপতি সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ‘চাইল্ড লেবার ইলিমিনেশন প্লাটফর্মের (সিএলইপি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসনে বিগত সরকারের আমলে তিন দফায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিন্তু জরিপে দেখা যাচ্ছে, দেশে শিশুশ্রম বেড়েছে, যদিও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম কমেছে। কিন্তু তা শিশুর সংজ্ঞার পার্থক্যের কারণে। তাহলে প্রকল্পের টাকা কোথায় গেল এবং কী কাজ হলো, তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা দরকার। এডুকো বাংলাদেশের পরিচালক আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে সভায় তিনি আরো বলেন, শিশুশ্রম আইনে নিষিদ্ধ। শিশুকে শ্রমে রেখে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলা অসম্ভব। অথচ বাল্যবিয়ে বন্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশের অভিযানের খবর পাই। কিন্তু শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে কোনো অভিযানের কথা শুনি না। শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে অভিযানের জন্য সরকারকে প্রশাসনিক নির্দেশ দিতে হবে। এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জাতীয় পর্যায়ে আইন ও নীতি প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিশুশ্রম আমাদের কমিশনের কাজে অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে। আমরা দেখেছি, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ নিয়ে নানা মতভেদ থাকলেও লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত করে যে কোন কাজই শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা চাই, কোনো শিশুই শ্রমে থাকবে না। সবাই স্কুলে যাবে। সামর্থ্যবানরা কমপক্ষে একটি শিশুর দায়িত্ব নিলে এই কাজ অনেকটা এগিয়ে যাবে। এ কাজে শুধু সরকারকে দায়িত্ব দিলে হবে না, এর সাথে জড়িত সব সংগঠনকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তবে সরকারকে এ বিষয়ে জবাবদিহি করতে হবে। শিশুশ্রম নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর সাথে আলোচনা করে কমিশন সুপারিশ চূড়ান্ত করবে বলে তিনি জানান।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপ-পরিচালক এম রবিউল ইসলাম বলেন, শিশুশ্রম নিয়ে সরকারের কাজের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করতে চায়। বিশেষ করে শিশুদের গৃহস্থালি কাজ নিয়ে কাজ করা খুবই জরুরি। শ্রম আইনে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় গৃহস্থালি কাজ এখনো আমরা যুক্ত করতে পারিনি বা কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নেয়নি। শিশুশ্রম বন্ধে গ্রাম থেকে কাজ শুরু করা আহ্বান জানিয়ে ওয়ার্ল্ড ভিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম ডিরেক্টর চন্দন জেড গোমেজ বলেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছে।

আমরা ইতোমধ্যে এক হাজার তিনটি ইউনিয়নকে শিশুশ্রম মুক্ত করেছি। যেখানে আগামীতেও শিশুশ্রমিক পাওয়া যাবে না। সবাই যদি এভাবে কাজ করেন তাহলে দ্রুত দেশকে শিশুশ্রম মুক্ত করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের (বিএলএফ) নির্বাহী পরিচালক এ কে এম আশরাফ উদ্দিনের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন গুড নেইবারস-বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর এম মাঈনউদ্দিন মইনুল, শাপলা নীড়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর তমকো উচিয়ামা, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাহামুদ উল্লাহ, নারী উন্নয়ন শক্তির প্রধান নির্বাহী আফরোজা পারভীন, শিশু কল্যাণ পরিষদের মাসুদ মান্না, এডুকো বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক আফজাল কবীর খান, ইপসার অ্যাডভোকেট শারমিন সুলতানা, বাংলাদেশ সলিডারিটি প্লাটফর্মের হেনা আক্তার রুমা প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত