গাজীপুরের টঙ্গীতে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর টঙ্গী পূর্ব থানার প্রধান ফটকে জুবায়ের অনুসারী কয়েক হাজার মুসল্লি জড়ো হন। পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকালে টঙ্গী-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে সমাবেশ করেন তারা। জুবায়েরের অনুসারীদের অভিযোগ, ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর ইজতেমা মাঠ দখল করতে মাওলানা সাদের অনুসারীরা মুসল্লিদের ওপর হামলা চালান। হামলার ঘটনায় ওই সময় কোনো বিচার হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে বিচারের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন। পুলিশ ও সাদ অনুসারীরা জানান, ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত জুবায়েরের অনুসারীদের তত্ত্বাবধানে জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বরে দ্বিতীয় ধাপে জোড় ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি চান সাদের অনুসারীরা। কিন্তু সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে তাদের অনুমতি দেয়া হয়নি। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সাদের অনুসারীদের ইজতেমা আয়োজক কমিটির কয়েকজন মুরুব্বি ইজতেমা মাঠের পশ্চিম অংশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় জুবায়ের অনুসারীরা তাদের বাধা দেন। পুলিশের সহযোগিতার জন্য সাদ অনুসারীরা টঙ্গী পূর্ব থানায় আসেন। পরে পুলিশের সহায়তায় তারা ইজতেমা মাঠের দিকে রওনা হন। আগে থেকেই লাঠি-সোঁটা নিয়ে অবস্থান করা জুবায়েরের অনুসারীরা মন্নু গেট এলাকায় সাদের অনুসারীদের একটি প্রাইভেটকারের গ্লাস ভাঙচুর করেন। এতে প্রাইভেটকারে থাকা সাদ অনুসারীদের দুজন আহত হন। সহকর্মীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে ২০১৮ সালে সাদের অনুসারীদের হামলার বিচারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেন জুবায়েরের অনুসারীরা। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মুফতি মাসুদুল করিম গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) এসএম নাসিরুদ্দিনের কাছে স্মারকলিপি দেন। এ সময় জুবায়ের অনুসারীদের ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বিরা উপস্থিত ছিলেন। মুফতি মাসুদুল করিম বলেন, ?‘২০১৮ সালে সাদের অনুসারীরা আমাদের ওপর হামলা করেছিল। কিন্তু আমরা বিচার পাইনি। এ বছরও অন্যায়ভাবে ইজতেমা মাঠে প্রবেশের চেষ্টা করেছে তারা। গত বৃহস্পতিবার আমরা তাদের বাধা দিয়েছি। আজ বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিচারের দাবিতে পুলিশের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি।’ টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘২০১৮ সালের ঘটনায় মাওলানা সাদের অনুসারীদের পক্ষ থেকে ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০-৪০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছিল। ওই মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে আমাদের।’
উপ-কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) এসএম নাসিরুদ্দিন বলেন, ‘জুবায়েরের অনুসারীরা স্মারকলিপি দিয়েছেন। ইজতেমা মাঠ ও আশপাশের বিশৃঙ্খলা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জোড় ইজতেমা ঘিরে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর টঙ্গী স্টেশন রোড ও মিলগেট এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।’