টানা চার দিন ধরে চলা মৃদু শৈত্যপ্রবাহে কাবু পঞ্চগড় জেলা। হিমালয় থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা বাতাস আর কুয়াশার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন। আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ছয়টায় পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে গত সোমবার সকাল নয়টায় তাপমাত্রা ছিল ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের সহকারী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সরেজমিন দেখা যায়, কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়া যোগ হওয়ায় শীতের তীব্রতা কয়েকগুণ বেড়েছে। মাঘের এই শীতে নাকাল হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে যানবাহনগুলোকে। সন্ধ্যার পর জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। ছিন্নমূল আর গ্রামীণ মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। কনকনে শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে অনেকেই বাড়ির আঙিনা ও ফুটপাতসহ চায়ের দোকানের চুলায় বসে আগুন পোহাচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে শহরের রৌশনাবাগ এলাকার রাজমিস্ত্রী আক্তার হোসেন বলেন, রাত থেকে প্রচণ্ড শীত আর ঠান্ডা বাতাস বইছে। সকালে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। তীব্র ঠান্ডায় হাত একদম বরফ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু উপায় তো নেই। কাজ না করতে পারলে কী খাব। তাই পরিবারের কথা ভেবে কষ্ট সহ্য করে হলেও কাজে যেতে হচ্ছে। উপজেলা সদরের ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, সকালে ভ্যান নিয়ে বের হওয়া কঠিন হয়ে গেছে। উত্তরে কনকনে হিমেল বাতাসের কারণে খুব শীত লাগছে। ভ্যান চালানো যাচ্ছে না।
এদিকে তীব্র শীত ও টানা শৈত্যপ্রবাহের কারণে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, সকাল ছয়টায় তেঁতুলিয়ায় ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৯ শতাংশ। সামনের দিকে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে।