ঢাকা ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

আশ্রয়ণ প্রকল্পে পুষ্টি বাগান

আশ্রয়ণ প্রকল্পে পুষ্টি বাগান

পাটকাঠির বেড়া, তার উপরে পলিথিন আর পাটকাঠি দিয়েই চালা দেয়া রান্না ঘর। রান্না ঘরের পাশের একটু জাইগা থেকে বাঁশের কঞ্চি বেয়ে উঠছে কুমড়া গাছের লতাগুলো। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেয়ে উঠছে মেটে আলুর লতাও। কিছু কিছু ঘরের চাল ছেঁয়ে গেছে চাল কুমড়ার লতায়। ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে লতানো এই গাছগুলো। ঘরে এক কোনে বাঁশের মাঁচায় ভর দিয়ে উঁকি দিচ্ছে পুঁইশাক। করলা, সিম, বরবটি, লাউ, ঝিঙ্গা, চিচিংগা। নতুন লাগানো পেঁপে গাছেও এসেছে ফুল, ধরেছে পেঁপে। এ যেন চোখ ধাধানো দৃশ্য। এগুলো সবই ভূমিহীন ব্যক্তিদের গড়ে তোলা ফসলের চিত্র। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা আশ্রয়ণ প্রকেল্পর বাসিন্দাদের বাড়ির আঙিনা এবং ঘরের চালা, রান্না ঘরের চালা তারা সবজিতে ভরে তুলছেন। আশ্রয়ণ প্রকেল্পর বাড়িগুলো এখন এক একটি পুষ্টির বাগানে রূপ নিয়েছে। মৌসুমি নানা সবজির চাষ করছেন তারা বাড়ির আশপাশে। রাস্তার দু ধারের পতিত জমিতে মাঁচা করে শিম, করলা ও চালকুমড়ার চাষ করেছেন। স্বল্প পরিষরে বসত বাড়ির আঙিনায় এসব সবজি চাষ করে, যেমন পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে, তেমন পরিবেশও সুন্দর হচ্ছে। পুরুষের চেয়ে নারীরায় এগিয়ে এ চাষের ক্ষেত্রে। আর বাড়ির আশপাশের এসব জমি এবং ঘরের চালায় সবজি চাষ সম্পর্কে তাদের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি অফিস। সেইসঙ্গে বিনামূল্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রতিটি ঘরে ঘরে এসব সবজি বীজ দিয়ে সহায়তা করেছে কৃষি অফিস। সেই বীজ রোপণ করে পরিচর্যা করেছে আশ্রয়ণ প্রকেল্পর এসব মানুষ। বাড়ির আশপাশে এসব সবজি চাষ করে বেশ খুশি তারা। আমলা আশ্রয়ণ প্রকেল্পর বাসিন্দা রাশিদা খাতুন জানান- বাড়ির আশপাশে এবং ঘরের চালায় যে সবজি করা যায় তা বিষমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত। বাজারে যেসব সবজি পাওয়া যায় তার চেয়ে অনেক ভালো। বাজারে বেশির ভাগই সার ও বীষ দেয়া সবজি।

তিনি বলেন, আমি ঘরের এক পাশে চালকুমড়ার বীজ রোপণ করেছিলাম। চালকুমড়ার লতা এখন ঘরের চাল ছেয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি চালকুমড়াও পেয়েছি। হাশেম আলী জানান, করোনার মধ্যে কৃষি অফিসের লোকজন এসে আমাদের এখানে বিনামূল্যে বিভিন্ন সবজির বীজ দিয়ে গিয়েছিল। আমি লাউ, চালকুমড়া, পুঁইশাকের বীজ নিয়েছিলাম। বাড়ির আঙিনায় সেগুলো চাষ করেছি। সকেরা খাতুন বলেন, আমি চালকুমড়া ও করলার বীজ পেয়েছিলাম। সেগুলো রোপণের পরে লতাগুলোকে আমি বাঁশের মাঁচা করে তুলে দিয়েছি। এরই মধ্যে আমি ১০-১৫টা কুমড়া পেঁয়েছি। করলা এখনো ধরেনি। তবে ফুল এসেছে।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন বলেন- আমি নিয়মিত আশ্রায়ণ প্রকল্পের এসব সবজি পরিদর্শন করি। বসতবাড়িতে এসব সবজিতে তেমন একটা খরচ ও পরিচর্যার দরকার হয় না। মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কৃষকদের বসতবাড়িতে পতিত জায়গায় ফসল উৎপাদনের নিয়ে আসার লক্ষ্যে মিরপুর উপজেলা পরিষদের সহযোগিতায় মিরপুর উপজেলার ১৮৫টি পরিবারের মাঝে বিভিন্ন সবজির বীজ বিতরণ করেছি। তিনি আরো বলেন- মিরপুর উপজেলার আমলা আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ গ্রামাঞ্চলের মানুষ বসতবাড়িতে সবজি চাষ করছে। যার ফলে পারিবারিক পুষ্টি ও আর্থিক দিক দিয়েও লাভবান হচ্ছে। মিরপুর উপজেলার সকল পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনার জন্য আমরা চেষ্টা করে চলেছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত