আশুলিয়ায় ছয় ছাত্রের লাশ পেট্রল ঢেলে পোড়ানো হয়
তাজুল ইসলাম
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই-আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় নিহত ছয় শিক্ষার্থীর লাশ পেট্রল ঢেলে পোড়ানো হয় বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট ছয় ছাত্রকে পুলিশ ঠান্ডা মাথায় খুন করে তাদের মরদেহ ভ্যানের ওপর তুলে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে ফেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি একথা বলেন। তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্টের নৃশংসতম ঘটনাগুলো নিয়ে তদন্ত সংস্থা এবং প্রসিকিউশন টিম খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। বর্বরতম ঘটনাগুলোকে আমরা প্রায়োরিটি দিচ্ছি। চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমাদের তদন্ত সংস্থা তদন্ত করে বের করেন যে, গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছয়জন ছাত্রকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে। পরে লাশগুলোকে ভ্যানগাড়ির ওপর একটার পর একটা রেখে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। পরে এ লাশগুলোকে আরেকটি পুলিশভ্যানের ওপর ছুড়ে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল। সেই সরকারের পক্ষে তারা সর্বোচ্চ নৃশংসতম আচরণ করেছিল।
তিনি বলেন, পুলিশভ্যানে উঠিয়ে সেই লাশগুলোর ওপর পেট্রল ঢেলে দেয়া হয় এবং পরবর্তীতে আগুন লাগানো হয়। এ ঘটনায় আমরা প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, লাশগুলোকে পুড়িয়ে ফেলার জন্য আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। তাজুল বলেন, এদের মধ্যে একজন জীবিত ছিল। জীবিত থাকা অবস্থায় তার গায়ে পেট্রল লাগিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
‘এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাহিনী ঘটিয়েছে। নৃশংসতার প্রমাণ এটা’- যোগ করেন চিফ প্রসিকিউটর।
তিনি আরো বলেন, এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে যে ব্যক্তি বা যারাই জড়িত ছিল তাদের মধ্যে দুজনকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার মধ্যে একজন হচ্ছে মুকুল চকদার। তাকে গ্রেফতারের জন্য আমরা আদালতে ওয়ারেন্ট চেয়েছিলাম। আদালত ওরেন্ট জারি করেছিল। সে অনুযায়ী গতকালকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় আরও একজন পুলিশ সদস্য মালেককে গতকাল কিশোরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হয়েছে। যেহেতু গতকাল ছুটি ছিল এজন্য তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ওখানকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
মালেক এখন কিশোরগঞ্জে আটক আছেন জানিয়ে তাজুল বলেন, তার মামলার নথি যথাযথভাবে ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে। তাকে এ মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হবে। তদন্ত সংস্থা এবং প্রসিকিউশন টিম মিলে আমরা কাজ করছি। খুব দ্রুতই আমরা এ তদন্ত গুছিয়ে আনব এবং তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব। আমরা খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া করতে পারব।