ভোলার চরাঞ্চলে ক্যাপসিকাম চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। কয়েক বছর আগে এসব চরে প্রথম ক্যাপসিকাম চাষ করা হয়। পরীক্ষামূলকভাবে ভালো ফলন ও চাহিদা বেশি থাকায় অন্যান্য কৃষকরাও ঝুঁকে পড়েন ক্যাপসিক্যাম চাষে। সে থেকে বাড়তে থাকে ক্যাপসিকাম চাষ। প্রতি বছরের মতো এ বছরও বাম্পার ফলন হয়েছে ক্যাপসিকামের। ফলন ভালো ও দামও বেশি পাওয়ায় সন্তুষ্ট এখানকার কৃষকরা। এখানকার ক্যাপসিকাম মাঠ থেকে তুলতে না তুলতেই সরাসরি বরিশাল হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার বাজারগুলোতে চলে যায়। বেশি লাভবান হওয়ায় আগামীতে আরো বেশি জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করার কথা ভাবছেন কৃষকরা। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এ জেলায় ৭৪ হেক্টর জমিতে ক্যাপসিকামের আবাদ হলেও এ বছর ৮০ হেক্টর জমিতে ক্যাপসিকাম আবাদ করা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ১৪ মেট্রিক টন হিসেব জেলায় এ বছর মোট ১ হাজার ১২০ টন ক্যাপসিকাম উৎপাদন হয়েছে। মাঝের চরের কৃষক সাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন, এ বছর তিনি দুই একর জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেন। প্রতি একরে ১৪-১৫ টন করে প্রায় ৩০ টনের মতো ক্যাপসিক্যাম ফলন হয়েছে। বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় জমি থেকে পাইকাররা ক্যাপসিক্যাম নিয়ে যায়। দামও ভালো পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে ক্যাপসিকাম চাষ করে তারা ভালোই আছেন। ইলিশার কৃষক মো. রুবেল বলেন, এ চরে এমন কোনো ফসল নেই, যার চাষ করা হয় না। তবে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় ক্যাপসিকাম। এ এলাকার মাটি ক্যাপসিক্যাম চাষে খুব উপযোগী হওয়ায় ভালো ফলন মিলে। দাম নিয়ে তেমন চিন্তা করতে হয় না। বিভিন্ন এলাকায় নৌযানে করে এ সবজি পাঠানো হয়। রায়পুর-লক্ষ্মীপুর হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যায় এখানকার ক্যাপসিকাম। রোগবালাই বা পোকা মাকড়ের আক্রমণ তেমন নেই বললেই চলে। তাই ভোলার চাষিদের মধ্যে ক্যাপসিকাম চাষ আজকাল খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. হাসান ওয়ারেসুল কবির বলেন, জেলায় বিগত দিনগুলোতেও ফসল উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রেখে এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরও ক্যাপসিকাম চাষে সফল এ জেলার কৃষকরা। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করে যাওয়া হচ্ছে। আগামীতে যদি পরিস্থিতি ও পরিবেশ অনুকূলে থাকে তাহলে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি ক্যাপসিকাম চাষের পরিধি আরো বৃদ্ধি পাবে।
