ঢাকা ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

চরাঞ্চলে মসুর ডালের চাষ বাড়ছে

চরাঞ্চলে মসুর ডালের চাষ বাড়ছে

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলের কৃষকরা স্বল্প খরচ আর কম সময়ে অধিক লাভের আশায় মসুর ডাল চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছে। উচ্চ ফলনশীল নানা জাতের বীজ বাজারে আসায় কৃষক অন্য ফসলের পরিবর্তে ধীরে ধীরে মুসুর ডাল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। উৎপাদন খরচ কম। বাজারে চাহিদাও ব্যাপক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। ক্ষেতভর্তি ফুল ও ফল দেখে এবার কৃষকের মুখে দেখা দিয়েছে হাঁসির ঝিলিক। চরাঞ্চলের কৃষকদের সাথে আলাপকালে জানায়, মসুর ডাল চাষে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় কম খরচে যথা সময়ে মসুরের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, বীজ, সার, কীটনাশক এবং পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় ৪-৫ হাজার টাকা। এছাড়া সরকারি বীজ, সার ও অন্যান্য সহযোগিতার কারণে খরচ কমেছে। উপজেলার চরাঞ্চলে কৃষকের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ এখন ফুলে ফুলে ভরে আছে। বিভিন্ন গ্রামের মাঠ এখন মসুর ক্ষেতে ভরে গেছে। কীটনাশক এবং ওষুধ প্রয়োগের কাজসহ নানা কাজে ব্যস্ত চাষিরা। উপজেলার ইন্দুখুর চরের চাষি শাজাহান আলী জানায়, অন্যান্য ফসলের তুলনায় মসুর ডাল চাষে খরচ ও পরিশ্রম কম। দামও ভালো পাওয়া যায়। একটু দেরিতে বিক্রি করতে পারলে বেশি লাভবান হওয়া যায়।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, অত্যাধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ডাল মসুর। বাংলাদেশে এটি একটি অর্থকরী ফসল। মানবদেহে আমিষের অভাব পূরণের জন্য যথেষ্ট এ ডাল। দেশে ডালের মধ্যে মসুর সবচেয়ে জনপ্রিয়। দোআঁশ ও পলিমাটি মসুর চাষের জন্য উত্তম। তবে এটেল দোআঁশ মাটিতে এটি ভালো জন্মে। সব ধরনের মাটিতে মসুরের চাষ করা যায়। অক্টোবর থেকে নভেম্বর মসুর বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। ছিটিয়ে বা সারিবদ্ধ উভয় পদ্ধতিতে বীজ বপন করা যায়। বীজ ছিটিয়েই বেশি বপন করা হয়। নদীর অববাহিকা চরাঞ্চলের পলি মাটি সাধারণত উর্বর হয়। তাই জমিতে জৈবসারের প্রয়োজন হয় না। তবে বেলে দোআঁশ বা এঁটেল দোআঁশ মাটিতে এ ধরনের সার দিয়ে মাটির উর্বরতা বাড়ানো যায়। বীজ সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে মাটির পাত্র, টিন অথবা ড্রামে সংরক্ষণ করতে হয়, যাতে বাতাস কিংবা কীটপতঙ্গ ঢুকতে না পারে। পোকার আক্রমণ হয়েছে কিনা দেখার জন্য বর্ষাকালে মাঝে মাঝে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। গম, আখ, ভুট্টা ও সরষের সঙ্গে সাথীফসল হিসেবে মসুর ডালের চাষ করা যায়। এছাড়া দেশে সরষের সঙ্গেও মিশ্র ফসল হিসেবে মসুর চাষের প্রচলন রয়েছে। এটি একটি লাভজনক ফসল। মসুর ডাল চাষের জমিতে পরবর্তী সময়ে পাট চাষ করার জন্য সার খরচ খুবই কম হয়। মসুর ডাল চাষের কারণে জমিতে প্রচুর জৈব সারের সৃষ্টি হয়। এর ফলে পাটের ফলন খুব ভালো হয় এবং জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত