শীতকালীন রসনা বিলাসের অন্যতম সুস্বাদু খাদ্য কুমড়োর বড়ি। এখন শুধু গ্রাম অঞ্চলেই নয়, শহরেও কুষ্টিয়ার তৈরি কুমড়োর বড়ির চাহিদা বেশি। তাই কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় কুমড়োর বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত গৃহিণীরা। এই কুমড়ো বড়ির চাহিদা থাকায় জেলার বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবেও বড়ি তৈরি হচ্ছে। দেশব্যাপী কুমড়ো বড়ির চাহিদা থাকায় কুষ্টিয়ায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কুমড়োর আবাদ হয়ে থাকে। এ কুমড়ো দিয়েই তৈরি করা হয় বড়ি। প্রায় ২ যুগ ধরে এ বড়ি তৈরি করে কুষ্টিয়ার ৫ শতাধিক পরিবার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সারা বছর ছাড়াও শীত মৌসুমে চাহিদা বেশি থাকায় কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কুষ্টিয়ার জগতি ও লাহিনী পাড়ার কুমড়ো বড়ি পল্লীর কুমড়ো বড়ি কারিগর গৃহিনীরা। সেখানে শুরু হয়েছে শীতকালীন রসনা বিলাসের জন্য অন্যতম সুস্বাদু খাদ্য ‘কুমড়ো বড়ি’ বানানোর ধুম। শীতকালীন সব ধরনের তরকারিতে বাড়তি স্বাদ আনয়নের জন্য কুমড়ো বড়ির কদর এখন গ্রাম ছাড়িয়ে শহরেও সমাদৃত হয়ে সমভাবে। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সব শ্রেণীর মানুষেরই নিত্যদিনের খাবারে তরকারীর অতি প্রিয় অনুষঙ্গ এ কুমড়ো বড়ি। মিরপুর উপজেলার মশান গ্রামের আলেয়া খাতুন বলেন, পাকা ও পরিণত চালকুমড়ো কুঁড়ে তার সঙ্গে মাস কালাই কিংবা কালাইয়ের ডাল বেঁটে পাঁচফড়ং ও কালোজিরা দিয়ে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা হয় এই কুমড়ো বড়ি। কুমড়ো বড়ি তৈরিতে বেশ পরিশ্রম ও ঝক্কি ঝামেলাও পোহাতে হয় বাড়ির বৌ-ঝিদের। আবার বড়ি তৈরির পর যদি তীব্র রোদ কিংবা তাপ না থাকে তাহলে হাড়ভাঙা খাটুনি আর দীর্ঘ সময়ের পরিশ্রম সবই বৃথা যায়। কেননা বড়ি বানানোর পর যত দ্রুত তা রোদের তাপে শুকানো যায় ততই সুস্বাদু হয় এই কুমড়ো বড়ি।
একই এলাকার আয়েশা খাতুন জানান, বছরে একবার এই কুমড়ো বড়ি তৈরি করে থাকি। নিজেদের খাওয়া এবং মেয়ে জামাইর বাড়িতে পাঠানো লাগে। এবারও বাড়ির আঙ্গিনায় লাগানো চালকুমড়ো সংগ্রহ করে মাসকলাই মিশিয়ে এ কুমড়ো বড়ি তৈরি করেছি। অতি যত্নের সঙ্গে গ্রামের নারীরা কুমড়ো বড়ি তৈরি করে। জগতি এলাকার আনোয়ারা বলেন, এ ব্যবসা সারাবছর চললেও ৬ মাস ভালো চলে। তবে পরিশ্রমের তুলনায় তারা তেমন মূল্য পান না। কুষ্টিয়ার তৈরি কুমড়োর বড়ি এখন গ্রামের বাড়ির আঙিনা ছেড়ে শহরে এমনকি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোর কাঁচা বাজারেও স্থান করে নিয়েছে। কুষ্টিয়ার তৈরি বড়ি জেলার চাহিদা পূরণ করে প্রতিদিনই বাইরে পাঠানো হচ্ছে। এখানকার তৈরি বড়ি অত্যন্ত ভালো ও সুস্বাদু হওয়ায় দিনদিন বেড়েই চলেছে কুষ্টিয়ার কুমড়ো বড়ির চাহিদা।