ঢাকা ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পাঁচ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ করবে সরকার

পাঁচ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ করবে সরকার

বর্তমান বাস্তবতায় এখনই ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির ‘প্রয়োজন নেই’ বলে মনে করেন আশিক চৌধুরী। সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার যে মিশন বিগত আওয়ামী লীগ সরকার নিয়েছিল, সেখান থেকে বেরিয়ে এসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘অগ্রাধিকার’ ভিত্তিতে কেবল পাঁচটি অঞ্চল নিয়ে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। বর্তমান বাস্তবতায় এখনই ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির ‘প্রয়োজন নেই’ মন্তব্য করে আশিক চৌধুরী বলেছেন, আগামী দশ বছরে ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা গেলেই সেটি ‘যথেষ্ট’ হবে বলে তিনি মনে করেন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাঁচ সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ করা হবে। আমরা প্রমিজ করছি, এসব অর্থনৈতিক জোনে আগামী ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও রাস্তার সংযোগ দেয়া হবে।

চিহ্নিত পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্পূর্ণভাবে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন হয়ে গেলে এবং পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে আমরা বাকি পাঁচটি জোনে কাজ শুরু করব। এতে ৫-৭ বছর সময় লাগতে পারে। এই পাঁচ অঞ্চল হলো- জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এসব অঞ্চলের পুরো জায়গাজুড়ে আবার কাজ করবে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ সেসব জায়গায় ‘স্বল্প পরিসরে’ কাজের পরিকল্পনা নিয়েছে। দেশের বৃহত্তম অর্থনৈতিক অঞ্চল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’ এর নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা ঘিরে এই শিল্পনগরের আয়তন ৩৩ হাজার ৮০৫ একর। এর মধ্যে কেবল ১ হাজার ৪১ একরে আগামী দুই বছরে কাজ হবে। আশিক চৌধুরী বলেন, তিনি বেজার দায়িত্ব নেয়ার পর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী ও সংস্থার সঙ্গে যে আলোচনা করেছেন, তাতে সম্পদ ও সেবার স্বল্পতার বিষয়টি বার বার উঠে এসেছে।

সে কারণে আগামী দুই বছরকে চার ভাগে বিভক্ত করে এ পাঁচ অঞ্চলে ইউটিলিটি সেবা চালুর পরিকল্পনার কথা বলেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা এতকিছু করে কী আউটপুট দেখতে চাই? ২০২৬-এর শেষে যেটা আমাদের এক্সপেক্টেশন, সেটা হলো, এর মধ্যে আরো ১৩৩ জন বিনিয়োগকারীকে বেজাতে অপারেশনাল করব। ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ বাড়াব। লোকাল ইনভেস্টমেন্ট ও ফরেন ইনভেস্টমেন্ট দুটো মিলে আমরা টোটাল ইনভেস্টমেন্ট এক্সপেক্ট করছি ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। ফাইনালি এক্সপেক্ট করছি, আগামী দুই বছরে বেজাতে আড়াই লাখ লোকের এমপ্লয়মেন্ট জেনারেট করব।’ তিনি বলেন, ‘এটা যদি অ্যাচিভ করতে পারি, তাহলে আমরা মনে করব যে বেজার ’২৫, ’২৬ ইজ সাকসেসফুল। দিজ ইজ আওয়ার গোল।’ যেসব জায়গা ইতোমধ্যে অধিগ্রহণ করা হয়েছে, কিন্তু অব্যবহৃত রয়েছে, সেখানে আগামী দুইবছরে অন্য কোনো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড করা যায় কিনা, তাও বেজা ভেবে দেখছে বলে জানান নির্বাহী চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এর মধ্যে মিরসরাইয়ে সোলার পাওয়ার প্লান্ট তৈরির সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। নতুন করে অর্থনৈতিক অঞ্চল না করে বরং সরকারের পুরোনো পাটকল, কারখানা যা এখন অব্যবহৃত আছে, কিন্তু জায়গা ও অবকাঠামো রয়েছে, সেগুলোকে অর্থনৈতিক অঞ্চলে রূপ দেওা যায় কি না, তাও ভাবার কথা আশিক চৌধুরী বলেন।

বর্তমানে দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলে ১৯টি ইকোনমিক জোনে কাজ চলছে। ১২২টি কোম্পানি নির্মাণ ও উৎপাদন পর্যায়ে আছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ৭ হাজার ২০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে এবং ৪৫ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে ২১২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত