ঢাকা ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

সাঙ্গুর দুই তীরে চীনা বাদামের বাম্পার ফলন

সাঙ্গুর দুই তীরে চীনা বাদামের বাম্পার ফলন

বান্দরবানের সাঙ্গু নদীর দু’তীরে জেগে উঠা চরে সবুজের সমারোহ নজর কাড়ছে পর্যটকদের। জেগে উঠা দু’তীরে চীনা বাদামসহ নানা ফলনে বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছেন কৃষকরা। প্রতিদিন সাঙ্গু নদীতে নৌকাভ্রমণের পাশাপাশি সবুজের সমারোহ উপভোগ করতে যাচ্ছে পর্যটকরা। দু’তীরের কৃষকরা ভ্রমণপিপাসুদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায়। নদীর তীরে চাষ হওয়া চীনা বাদাম পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার সাতটি উপজেলার নদীর পাড়ে এখন একই চিত্র। চাষিরা জানান, প্রতিবছর অক্টোবর থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বাদামের বীজ লাগানো হয়। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ক্ষেত থেকে এই বাদাম তোলা শুরু হয়। বাদামের বীজ লাগানোর আগে হাল-চাষ দিয়ে মাটি সামান্য নরম করে নিতে হয়। আর পরিষ্কার করতে হয় আগাছা। তারপর সারি সারি করে লাগানো হয় বাদাম বীজ। সাঙ্গু নদীর চরের মাটি উর্বর হওয়ায় দিতে হয় না অতিরিক্ত সার কিংবা কীটনাশক। তিন মাসের মধ্যেই পরিপূর্ণ বাদাম ফলে। তাই অল্প কষ্টে অধিক লাভে খুশি বাদাম চাষিরা। উৎপাদিত চীনাবাদাম গুণে মানে ভালো ও খেতে পুষ্টিকর হওয়ায় বাজারে চাহিদাও ভালো। প্রতি কেজি বাজারে বিক্রি হয় ৫০-৮০ টাকায়। উর্বর পলি, দোআঁশ মাটি ও আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার ফলনও হয়েছে ভালো।

কৃষকরা জানান, ফলন ভালো হয়েছে। আমরা প্রতিবছর দুই তিন লাখ টাকা আয় করি। এ উপার্জন দিয়েই আমাদের সংসার চলে। সরকার আমাদের সহযোগিতা করলে আরও লাভবান হব। উৎপাদিত বাদাম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকার ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানান, বাদাম সংগ্রহ করে তা শুকিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় বিদেশে রফতানি করা সম্ভব বলে মনে করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বান্দরবানের উপ-পরিচালক এস এম শাহ্ নেয়াজ। তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমাদের অনেক উদ্যোক্তা বান্দরবানের পার্বত্য জেলার চীনাবাদাম বিদেশে রফতানি করছেন। উপ-পরিচালক এস এম শাহ্ নেয়াজ আরো বলেন, এ বছর বান্দরবানের সাতটি উপজেলায় ২ হাজার ৩১৭ হেক্টর জমিতে চীনা বাদাম, শীতকালীন সবজি ৪ হাজার ২৭৩ হেক্টর ও ৮০৩ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ করা হয়েছে।

এই কর্মকর্তা মতে, প্রতিবছরের মতো, এই বছরেই চীনাবাদামসহ সকল চাষাবাদে বাম্পার ফলনের আশা করেন তিনি। বান্দরবানে ভ্রমণে যাওয়া উখিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সাঈদ মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন, পাহাড় ঘেরা বান্দরবানের ভ্রমণটি অত্যান্ত আনন্দদায়ক। সাঙ্গু নদীতে নৌকাভ্রমণে গিয়ে সবুজের সমারোহ উপভোগ করে মন ভরে উঠে। একই কথা জানালেন ঢাকার বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা মুরশিদুল আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘দু’তীরে বাদাম চাষিদের যদি সরকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। তা হলে চাষিরা জেগে উঠা চরে চাষাবাদ করে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়ক হবেন। বান্দরবানের ইকোসেন্স রিসোর্ট এর পাবলিক রিলেশন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, মৌসুম ছাড়াও সারাবছর বান্দরবানে পর্যটকের আনাগোনা থাকেন। নীলাচল, নীলগিরিসহ অন্য পর্যটন স্পষ্টে ঘুরার পরও পর্যটকরা সাঙ্গু নদীতে নৌকাভ্রমণে যান। ওখানে সবুজের সমারোহ দেখে পর্যটকরা মুগ্ধ হন। এবং বাড়তি আনন্দ উপভোগ করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত