সুসংবাদ প্রতিদিন

চরাঞ্চলে বাদামের বাম্পার ফলন

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আজাহার আলী, বগুড়া

বগুড়ার চরাঞ্চলে বেলে-দোআঁশ মাটিতে বাদাম চাষ ভালো হয়। বাদাম চাষাবাদে খুব কম খরচে অধিক লাভ পায় কৃষকরা। সারিয়াকান্দী, সোনাতলা এবং ধুনটের যমুনার চরাঞ্চলে বাদাম চাষের জন্য উপযোগী। বগুড়ায় যমুনার পানি এখন তলানীতে ঠেকেছে। জেগে উঠেছে বিস্তীর্ণ চর। এই বালু চরে আপাতত এই সময় কোনো ফসল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই কৃষকরা এখন বাদাম (চিনা বাদাম) চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাদাম চাষে খুব একটা খরচ হয় না। খুব স্বল্প খরচে চিনা বাদাম চাষ হয়ে থাকে বগুড়ার চরাঞ্চলে। এ সময়টাতে বন্যার পানি থাকে না। বালু চরে বাদাম চাষের জন্য ক্ষেত এখন সম্পূর্ণ উপযোগী। যমুনার চরের কৃষকদের মধ্যে এখন বাদাম চাষে ধুম পড়েছে। বগুড়ার দুই উপজেলার চরাঞ্চলে বাদাম চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। বাদাম চাষে সার প্রয়োজন হয় না, সেচ দিতে হয় খুবই কম এবং নিড়ানি ছাড়াই অধিক লাভ হওয়ায় চরাঞ্চলে প্রাধান্য পাচ্ছে বাদাম। এমনকি দাম ও চাহিদা ভালো থাকায় চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে। সরজমিনে দেখা গেছে, বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা, ধারাবর্ষা, বোহাইল, ছোনপচা ও ধুনট উপজেলার শহড়াবাড়ী চরে বাদাম লাগাতে ব্যস্ত কৃষকরা। জমি তৈরি করে বাদাম বপন করছে তারা। কেউ শ্রমিক নিয়ে, কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে বাদাম চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে। আবার কোনো পরিবারের ছোট-বড় সব সদস্য মিলে বাদাম চাষ করছেন। সারিয়াকান্দি উপজেলার ছোনপচা চরের কৃষক আজাদ বলেন, খুব কম খরচেই বাদাম চাষ করা যায়। বাদামের চাহিদাও বেশি আবার দামও বেশি। বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয় না। জমি থেকেই ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যায়। বাদাম চাষে সারের প্রয়োজন হয় না আবার বেশি সেচও লাগে না। তাই খরচ কম হয়। তাই সারিয়াকান্দি ও ধুনটের যমুনার চরাঞ্চলে বাদাম চাষ ভালো হয়। এবার জেলার তিন উপজেলার (সারিয়াকান্দি, ধুনট ও সোনাতলা) চরাঞ্চলের এক হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হচ্ছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় এক হাজার ৭৩৩ মেট্রিক টন। এই বাদাম চাষে খরচ কম। বাদামের ফলন পাওয়ার জন্য বিঘাতে ছয় হাজার টাকা খরচ হয়ে খাকে। প্রতি বিঘাতে ৬-৭ মণ বাদাম পাওয়া যায়।

তিনি আরো বলেন, চরাঞ্চলে স্থানীয় জাতের বাদাম চাষাবাদ ভালো হয়ে থাকে। যাদের হার্টের সমস্যা তাদের জন্য বাদাম বিশেষ প্রয়োজন। বাদাম শরীরের কোলেস্টেরল দূর করতে সহায়ক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মতলুবর রহমান জানান, বগুড়ার সারিয়াকান্দী, ধুনট ও সোনাতলা উপজেলার চরে ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে এক হাজার ৭৩৩ টন অর্থাৎ বিঘাতে ৬ মণ। দিন দিন বাদাম চাষ বাড়ছে। কম খরচে অধিক লাভের জন্য চরের কৃষক বাদাম করে থাকেন। এক কেজিতে উৎপাদন খরচ পড়ে ৪২ টাকা। মাঠে সেই বাদাম (ভেজা ) বিক্রি করে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। শহরের বাজারে ওই বাদাম (শুকনা) বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। খুব কম খরচে বাদাম চাষে কৃষক অধিক লাভ পায়। বেলে-মাটিতে বাদাম চাষ ভালো হয়। চরের মাটি বাদাম চাষের উপযোগী।