সচিবালয়ে আগুনের ঘটনায় বিদেশে পাঠানো নমুনা পরীক্ষার ফল পাওয়ার পর চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। গতকাল সচিবালয়ে অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটিং অনুশীলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সচিবালয়ে আগুন লাগার ঘটনায় নমুনা বিদেশে পাঠানো হয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সিনিয়র সচিব বলেন, এই নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন এখনো আসেনি। অনেকগুলো স্টেজে পরীক্ষাটা করতে হয়। চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন কবে নাগাদ দেয়া হবে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বেশ একটা অংশ রেডি আছে। ওইটা (নতুন পরীক্ষার প্রতিবেদন) এলে পরে কনফার্ম করে আমরা যে হাইপোথিসিসগুলো বলেছি, যে পজিশনে আমরা একমত হয়েছি, সেটাকে কনফার্ম কিংবা আনকনফার্ম করা- সেটার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাখিল করা প্রাথমিক প্রতিবেদনে আগুন লাগার কারণ হিসেবে লুজ কানেকশনের কথা বলেছেন- এ বিষয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, বিদ্যুৎসংযোগে ভেতরে হিট বেড়ে গেছে, হিটটা বাড়তে বাড়তে এমন একটা স্টেজে গেছে যে, সেখান থেকে আগুনের সৃষ্টি হয়েছে। যে ম্যাটেরিয়ালগুলো ছিল, সেগুলো গলে সেখান থেকে আগুনের সৃষ্টি হয়েছে। নাসিমুল গনি বলেন, আগুন প্রতিরোধে আমাদের স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রথমটা হলো আমাদের সচেতনতা দরকার। সচেতনতা সৃষ্টির অংশ হিসেবে আমরা এই কাজগুলো করছি। ফায়ার ডোর তৈরি করা, এক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম তৈরি করা- এই জিনিসগুলো আমরা করছি। তিনি বলেন, ভবনের যে কমন স্পেসগুলো রয়েছে সেগুলো গণপূর্ত বিভাগ দেখবে। ভবনের এক্সিট, এন্ট্রি সেগুলো তারা কন্ট্রোল করবে। মন্ত্রণালয় তাদের অংশটুকু তারা নিয়ন্ত্রণ করবে। ওভারঅল যে স্পেস রয়েছে, যেগুলো ভবনের ভেতরে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করবে গণপূর্ত। তারা সেভাবেই ভবন ব্যবস্থাপনা সিস্টেম তৈরি করছে। বাইরের স্পেসে আগের নিয়ম অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় করবে।
সিনিয়র সচিব আরো বলেন, ব্যবসার খাতিরে অনেক রকম জিনিস করা হয়েছে। সেগুলো আমরা সবই রিভিউ করছি। স্থাপনের (যন্ত্রপাতি) পর থেকে আর ব্যবহার করা হয়নি কিংবা ত্রুটিপূর্ণ জিনিস দেয়া হয়েছে, সেগুলোর দায়দায়িত্ব আমরা নির্ধারণ করার চেষ্টা করছি। স্বরাষ্ট্র সচিব আরো বলেন, সচিবালয় বিভিন্ন ধরনের ভবন আছে। ১৯৭০-৭৫ সাল থেকে এই ভবনগুলো গড়ে উঠেছে। সেক্ষেত্রে এই ভবনগুলো অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা সময়ের ব্যাপার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিয়ে শুরু করলাম। পর্যায়ক্রমে সব মন্ত্রণালয়ে ভবনগুলোতে আমরা মহড়া করবো। সচিবালয় যারা কাজ করেন তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো হবে।