সংস্কার প্রশ্নে ৩১ দফার দিকে তাকান : দুদু

প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, দেশের সংস্কার করতে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো যে ৩১ দফা দিয়েছে তার দিকে তাকান। তাহলে অতি সহজেই সংস্কার করতে পারবেন। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পরিষদের নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পরিষদ।

এসময় দুদু বলেন, ৭২ থেকে ৭৫-এর সময়ে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল খুন, রাহাজানি হয়েছিল। ৭৫-এর পটপরিবর্তনের পর স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রমাণ করেছিলেন জিনিসপত্রের দাম কীভাবে কমাতে হয়। দুর্ভিক্ষ এড়িয়ে বিদেশে চাল রপ্তানি কীভাবে করতে হয় জিয়াউর রহমান কৃষকদের তা দেখিয়েছিলেন। খাল খননের মধ্য দিয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের হাতে তুলে দিয়ে কৃষকের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাদামাটির মধ্যে কাজ করে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের বর্তমানে যে সংস্কারের প্রশ্ন উঠছে দেশের এই সংস্কার করতে জিয়াউর রহমানের শাসনকালের দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন কীভাবে সংস্কার করতে হয়। তারপরও যদি বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল যারা সংস্কারের জন্য ৩১ দফা দিয়েছে সেটার দিকে তাকান। তাহলে দেখবেন কত সহজেই সংস্কার করতে পারবেন।

তিনি বলেন, দেশে একটি সরকার আছে। অন্তর্বর্তী সরকার। বিএনপিসহ যারা শেখ হাসিনার বিরোধী আন্দোলন করেছে তাদের পছন্দের সরকার। এই সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতা আমাদের বহন করতে হবে। অর্থাৎ আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে বহন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, মানুষের যে প্রত্যাশার জন্য পরিবর্তন হয়েছে। জিনিসপত্রের দাম কমবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো হবে। মানুষ স্বস্তির সঙ্গে বসবাস করতে পারবে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে পারবে। এখন যে পরিস্থিতি হয়েছে যার কারণে অনেক জিজ্ঞাসা তৈরি হয়েছে। জিজ্ঞাসা হচ্ছে যারা নির্বাচনের কথা বলছে তাদের গণতন্ত্রের শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছে শুধু নির্বাচন ও একটি দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য এই পরিবর্তন হয়নি।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য প্রধান সিঁড়ি হচ্ছে নির্বাচন। কারণ শেখ হাসিনা নির্বাচনকে শুধু বাধাই দেয়নি নির্বাচন নিয়ে তামাশা করেছে। এখন আমরা সেই নির্বাচনকে সরাসরি বিরোধিতা করছি এটা দুঃখজনক। এই জায়গা থেকে আমাদের সরতে হবে, কারণ নির্বাচন গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য প্রধান সিঁড়িই শুধু নয় দেশে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে নির্বাচন ছাড়া বিকল্প অন্য কোনো পথ নেই। তিনি বলেন, এই সরকার কোনো রাজনৈতিক দলের সরকার না। সব রাজনৈতিক দলের সমর্থনের সরকার। তাহলে সব রাজনৈতিক দলের সেন্টিমেন্ট তাদের বুঝতে হবে। সব রাজনৈতিক দলের সেন্টিমেন্ট বুঝতে হলে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা করতে হবে। আর গণতন্ত্রের পথে যাত্রা করতে হলে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, আমাদের পার্টির মহাসচিব বলেছেন আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব। এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই বলছেন, ছয় মাসের মধ্যে কীভাবে সম্ভব। এই ছয় মাসের আগে তো আরো ছয় মাস খেয়ে ফেলেছি। তাহলে আগামী ছয় মাসে সম্ভব না তারপরের ছয় মাসের সম্ভাবনা তাহলে তো জাতি অন্ধকারের দিকে ধাবিত হবে। সেই জন্য আমরা বলেছি কি করে সম্ভব? কত দিনে সম্ভব? কোন দিন সম্ভব? এটা বলেন।

কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, ড. ইউনূসসহ যারা এই সরকারে আছেন তারা আমাদের জাতির একটি গৌরবের জায়গায় ছিল। এ সরকার শিক্ষিত, মার্জিত ভালো সরকার। এ সরকার ব্যর্থ হোক এটা বিএনপি চায় না। এই সরকারের মধ্য দিয়ে যেন একটি ভালো সরকার, ভালো ব্যবস্থাপনা, ভালো একটি লক্ষ্যর দিকে এগিয়ে যেতে পারি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণতন্ত্র পরিষদের সভাপতি মোক্তার আখন্দের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়সার লিংকন, কৃষক দল নেতা এসকে সাদী প্রমুখ।