আর মাত্র ৮ দিন পর শুরু হতে যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। গত ১৫ বছরের তুলনায় এবারের বইমেলার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। বিনির্মাণের চেষ্টা চলছে এক নতুন বাংলাদেশের। গত বছরের জুলাইয়ের সেই অভ্যুত্থানের বিষয়গুলো নানাভাবে ফুটিয়ে তোলা হবে এবারের মেলায়। থাকবে ‘জুলাই চত্বর’। এর পাশাপাশি নানাভাবে সেই গণঅভ্যুত্থানকে উপস্থাপন করা হবে। ১ ফেব্রুয়ারি বইমেলা উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব সরকার আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, এবারের বইমেলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে মেলার বিভিন্ন জায়গায় ফুটিয়ে তোলা হবে। মেলার অঙ্গসজ্জা ও বিভিন্ন চত্বরে তার প্রকাশ ঘটবে। থাকবে জুলাই চত্বর নামে আলাদা চত্বর। মেলার রং হিসাবে লাল, কালো ও সাদাকে বেছে নেয়া হয়েছে। লাল বিপ্লবের প্রতীক, কালো শোকের প্রতীক। এই দুটি রংয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা সেটি তুলে ধরার চেষ্টা হবে। এ বছরের বইমেলার থিম ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’। এ স্লোগানকে ধারণ করেই মাসব্যাপী নানা আয়োজন থাকবে পুরো বইমেলায়। এদিকে বইমেলায় প্যাভিলিয়ন ও স্টল নির্মাণের জন্য লটারি এরই মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ থেকে পুরোদমে শুরু হচ্ছে নির্মাণকাজ।
বইমেলার সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে সরকার আমিন বলেন, সার্বিক প্রস্তুতি ভালো। মাঝখানে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। সেগুলোকে এরই মধ্যে মোকাবিলা করা হয়েছে। এখন রাত-দিন কাজ চলছে। যে কোনো মূল্যে সঠিক সময়ে মেলা শুরু হবে। তিনি বলেন, বইমেলার নিরাপত্তা মূলত রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা। সেটি আমরা পুরোপুরি পাচ্ছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পূর্ণ সহযোগিতা করছে। ছাত্রদের সহযোগিতা পাব আশা করছি। তারা সরাসরি সহযোগিতা করবেন।
বইমেলার অঙ্গসজ্জার বিষয়ে জানা গেছে, গত বইমেলায় যে ডিজাইন ছিল সেটিকে ভিত্তি করে আরও সহজে চলাচল করা সম্ভব, সহজে স্টলগুলোকে শনাক্ত করা সম্ভব এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, এবারের বইমেলাকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের শহিদদের নামে হবে সেই ভাগগুলো। এদিকে বইমেলাকে ঘিরে দেশের লেখক, প্রকাশক ও পাঠকরা এর মধ্যেই তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ শুরু করেছেন। প্রকাশকদের একটি বড় অংশ সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন কখন বইমেলা শুরু হবে। মঙ্গলবার প্যাভিলিয়ন ও স্টল বরাদ্দের লটারি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা কোন প্রকাশনীর স্টল নাম্বার কত তা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। অনেকে আবার গত বছরের প্যাভিলিয়ন ও স্টলের ছবি পোস্ট দিয়ে জানান দিয়েছেন এবারের বইমেলায় তাদের প্যাভিলিয়ন বা স্টল কোথায় থাকবে। উচ্ছ্বাসের কমতি নেই লেখকদের মাঝেও। তারা এবারের বইমেলায় কোন প্রকাশনা থেকে তাদের কী বই আসছে, সে বিষয়ে জানান দেওয়া শুরু করেছেন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়।