ঢাকা ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পলক-আতিক-সাদেক খান ফের রিমান্ডে

পলক-আতিক-সাদেক খান ফের রিমান্ডে

সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ও সাবেক এমপি সাদেক খানকে ফের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সাবেক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ চারজনকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গতকাল বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক রিমান্ডে নেওয়ার ও গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন। কারাগার থেকে এদের আদালতে হাজির করা হয়। সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পৃথক নির্দেশ দেন। ঢাকার মহানগর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী এসব তথ্য জানান।

গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদের এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সময়ে আটক করা হয়। একের পর এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের দফায় দফায় রিমান্ডে নেয়া হয়।

মোহাম্মদপুর থানায় করা এক ভ্যানচালককে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক এমপি সাদেক খান ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ সলুকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেক আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া উত্তরা পূর্ব থানার একটি হত্যা মামলায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয় । শুনানি শেষে আদালত আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর বিভিন্ন থানার পৃথক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৪ আসামিকে। গ্রেপ্তার দেখানো অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- ডিবির রমনা জোনের সাবেক দুই ডিসি মো. মশিউর রহমান ও মো. জুয়েল রানা।

সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে মিরপুর থানার পৃথক দুই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এ ছাড়া হাজারীবাগ থানার এক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে।

অন্যদিকে ধানমন্ডি থানার একই হত্যা মামলায় ডিবির রমনা জোনের সাবেক দুই ডিসি মো. মশিউর রহমান ও মো. জুয়েল রানাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মোহাম্মদপুর থানার এক ভ্যানচালককে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের রিমান্ড শুনানির সময় তাঁর আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, একজন মানুষকে কতবার রিমান্ডে নেয়া যায়? হাতে হাতকড়া, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরিয়ে আদালতে তোলা হয় পলককে।

এ সময় পলকের পক্ষের আইনজীবী ফারাজানা ইয়াসমিন রাখি আদালতকে বলেন, আসামি পলকের ৫৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এর ভেতর ৩৪ দিন রিমান্ডে ছিলেন তিনি। একজন মানুষকে আর কতবার রিমান্ডে নেয়া যায়।

আইনজীবী আরো বলেন, আসামি রিমান্ডে থাকার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। কিছুটা সুস্থ হলে আবার তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়। তাকে বারবার রিমান্ডে নিয়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে নিছক কারণে বারবার রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে।

এ সময় বিচারক বলেন, এ মামলায় তো আর রিমান্ডে নেয়া হয়নি। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে পিপি ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, রিমান্ডতো মাত্র শুরু হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হত্যার ষড়যন্ত্র। গণভবনে বসে হত্যা বা হামলার নির্দেশ দিয়েছেন তারা। ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন পলক।

এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা মামলার উদাহরণ টেনে পিপি বলেন, ১৫ আগস্টে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যায় মামলাও নয়, প্রথমে জিডি করা হয়। এই জিডির ৪ লাইন টেনে ২১ বছর পর কত মানুষকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। তাই ক্রিমিনাল মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আসামির রিমান্ড প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত পলকসহ তিন আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড শুনানি শেষে ফের পুলিশি কড়া নিরাপত্তায় হাজতখানায় নেওয়া হয় পলকসহ অন্য আসামিদের। এ সময় পলককে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করলে তিনি কিছু বলতে অস্বীকার করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত