কুমিল্লায় যৌথবাহিনীর পরিচয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি থেকে তুলে নেয়ার পর হাসপাতালে যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। ওই যুবদল নেতার নাম তৌহিদুল ইসলাম (৪৫)। তিনি জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি পাঁচথুবি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন।
ওই যুবদল নেতার ভাই আবুল কালাম আজাদ টিপু জানান, ‘আমার বাবা গত ৪ দিন আগে মারা গেছে। গতকাল শুক্রবার ছিল কুলখানি। আমরা শোকাহত। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর ৩টি গাড়ি ও একটি লাল রঙের গাড়ি আমাদের বাড়ি আসে। এ সময় পোশাক পরিহিত ও সাদা পোষাকে থাকা কয়েকজন তৌহিদুল ইসলামের কাছে অস্ত্র আছে এমন অভিযোগে রুমে তল্লাশি করে। আমার ভাইয়ের কাছে অস্ত্র নেই আমরা বার বার তা বলার পরও তারা আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যায়। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে আমরা থানায় ভাইয়ের খোঁজ নিয়েও পাইনি।’ তিনি আরো বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মোরশেদ মোবাইল ফোনে আমাদের জানায়, শহরতলীর গোমতী নদীর পাড়ের গোমতী বিলাশ নামক স্থান থেকে আমার ভাইকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নিয়েছে। আমরা হাসপাতালে গিয়ে ভাইয়ের লাশ দেখতে পাই। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। নির্যাতনে আমার ভাই নিহত হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।’
এসআই মোরশেদ বলেন, গোমতী পাড়ের ঝাকুনি পাড়ার গোমতী বিলাসে গিয়ে যখন তৌহিদকে গাড়িতে উঠাই তখনো তার প্রাণ ছিল। কিন্তু কুমেক হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’ কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাইফুল মালিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে আমাদের (পুলিশ) নিকট হস্তান্তর করার সময় সে অসুস্থবোধ করায় হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়। ময়না তদন্তের পর সন্ধ্যায় লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। পরিবার থেকে এখনো লিখিত অভিযোগ না পেলেও পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এদিকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ারুল হক বলেন, যুবদল নেতা তৌহিদ তাদের দলের একজন সৎ ও নিবেদিত নেতা ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তার ২ মেয়ে কোরআনের হাফেজ। সে অস্ত্রধারী হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যেত। তার মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তের দাবি করছি।