সংস্কার নিয়ে মতামত দিল ৭ দল, সময় চাইল ১৬ দল
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে গতকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে মতামত দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে এদিন পর্যন্ত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিয়েছে সাতটি রাজনৈতিক দল। আর ১৬টি দল সময় চেয়েছে। বাকি ১৪টি দলের সঙ্গে কমিশন আবার যোগাযোগ করছে বলে বৃহস্পতিবার দেয়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। এদিন বিকাল ৪টার মধ্যে মতামত দেয়া সাতটি দল হলো-লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) ও ‘আম জনতার দল’। এ দলগুলোকে নিয়ে আগামী মঙ্গল, বুধবার নাগাদ আলোচনা শুরু করা হতে পারে তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ ভবনে দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করা হবে। সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত জানতে ও ঐকমত্যে পৌঁছাতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কমিশন কাজ শুরু করে। সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গত ৬ মার্চ ৩৭টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে তুলে ধরা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশের বিষয়ে মতামত পাওয়ার পরই আলোচনা শুরু করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ১৩ মার্চের মধ্যে দলগুলোকে সুনির্দিষ্ট মতামত পাঠাতে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছিলেন কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। প্রতিবেদনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ স্প্রেডশিট আকারে দেয়া হয়েছে। এর বাইরে সংস্কার কমিশনের অন্যান্য সুপারিশের বিষয়ে দলের মতামত থাকলে কমিশন সেটিও গ্রহণ করবে বলে চিঠিতে বলা হয়েছিল। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আপনার দলের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট মতামত প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তীতে কমিশন আলোচনার সূচনা করবে।’ চিঠির সঙ্গে ছয়টি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর সারসংক্ষেপ স্প্রেডশিটে ছক আকারে দেয়া হয়েছে। দলের নাম ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ও পদবি থাকবে। প্রতিটি সুপারিশের ক্ষেত্রে মতামত (তিনটির মধ্যে যে কোনো একটিতে টিক চিহ্ন) চাওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- ‘একমত’, ‘একমত নই’ এবং ‘আংশিকভাবে একমত’। সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে ছয়টির মধ্যে যে কোনো একটি টিক চিহ্ন দিতে হবে। এগুলো হলো-‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের সময় গণভোটের মাধ্যমে’, ‘গণপরিষদের মাধ্যমে’ ‘নির্বাচনের পরে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে’ এবং ‘গণপরিষদ ও আইনসভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে’। এর বাইরে প্রতিটি সুপারিশের বিষয়ে ‘মন্তব্য’ করার সুযোগ রাখা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ। অন্য সদস্যরা হলেন- জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান। গত ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের হাল ধরা অন্তর্বর্তী সরকার দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত সংস্কারে দুই ধাপে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে।