দেশব্যাপী বেশ কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা এখন আলোচনার শীর্ষে। এরই মধ্যে আরও তিন জেলায় তিনটি ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এতে কয়েকজকে আটকও করেছে পুলিশ। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ অনুযায়ী-
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, আটক ৩ : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় প্রতিবন্ধী এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের কাগমারি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি জানাজানি হলেই অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশ। এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারও থানায় এজহার দাখিল করেছেন বলেও স্বীকার করেছেন ওসি গোলাম কিবরিয়া। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তরা দুজন শিশুসহ ৩জন রয়েছে। এরমধ্যে ওই এলাকারই নজরুল ইসলামের ছেলে মো. সাখাওয়াত। বাকিরা অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।
জানা গেছে, ১২ বছর বয়সী ওই বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরী কাগমারি জামে মসজিদে তার চাচির সঙ্গে তারাবির নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার চাচি মসজিদে ঢুকে গেলে সে বাইরে থেকে যায়। এই সুযোগে সাখাওয়াতসহ তার ৩ জন সহযোগি ওই কিশোরীকে বাগানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগী কিশোরী বাড়ি ফিরে তার বাবা-মায়ের স্মরণাপন্ন হয়। তার পরিবার এলাকার কিছু ব্যক্তিদের জানালে এই খবর জানাজানি হয়। পরে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে তাদের আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।
শিবগঞ্জ থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ওই মেয়েকে মসজিদের সামনে থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের সকালেই আটক করা হয়েছে। এরই মধ্যে ওই মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এজহার দাখিল করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লালমনিরহাটে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, যুবক গ্রেপ্তার : লালমনিরহাটে সাত বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে জহুরুল মোল্লা ওরফে সাগর নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার বিকালে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী এলাকায় এমন ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর বাবা হাতীবান্ধা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। বর্তমানে শিশুটি লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
শিশু ধর্ষণের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন নবী নিশ্চিত করেছেন। জহুরুল মোল্লা ওরফে সাগর বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার আসকোর গ্রামের হেলার মোল্লার পুত্র। সে দোয়ানী এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ করেন। অভিযোগ সূত্র ও স্থানীয়দের দেয়া তথ্যমতে জানা গেছে, অভিযুক্ত সাগর তার কাজের প্রয়োজনে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার অজুহাতে ভুক্তভোগী শিশুর বাড়িতে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে যায়। এ সময় বাড়িতে একা থাকা সাত বছর বয়সী ওই শিশুকে ২০ টাকার নোট দিয়ে লোভ দেখায় এবং ধর্ষণ করে। এসময় শিশুর চিৎকারে তার মা এগিয়ে আসলে সটকে পড়েন অভিযুক্ত সাগর। মা ও মেয়ের চিৎকারে শোরগোল পড়ে যায় ওই এলাকায়। পরে অভিযুক্ত সাগরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। আর ভুক্তভোগী শিশুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে ভুক্তভোগী শিশু লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন নবী বলেন, ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার একটি অভিযোগ দিয়েছে। ভুক্তভোগী শিশুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা অভিযুক্ত জহুরুল মোল্লাকে (সাগর) গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সাদিক সোয়াদ বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেফার্ড হয়ে আসা এক শিশুকে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই শিশুর সঙ্গে যৌন নিপীড়ন করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে। বর্তমানে ওই শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গলায় ছুরি ধরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ : ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ষষ্ঠ শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, গত ৩ মার্চ দেবতলা গ্রামের আহতাফ কাজীর ছেলে রিপন কাজী ওই স্কুলছাত্রীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এর কয়েক দিন পর মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন সে বাসায় ঘটনাটি খুলে বলে।
সে জানায়, এর আগেও রিপন তাকে একইভাবে কয়েকবার ধর্ষণ করেছে। তখন এ কথা কাউকে না বলতে তাকে গলায় ছুরি ধরে ভয়ভীতি দেখানো হয়। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা লোকলজ্জার ভয়ে তাকে কুষ্টিয়ায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাই। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে আমরা থানা-পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।’
শৈলকুপা থানার পরিদর্শক শাকিল আহমেদ বলেন, ‘অভিযুক্তকে আটকের জন্য আমরা অভিযান চালাচ্ছি। এ ছাড়া ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।’