ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আ.লীগের এমপির ব্যানার সরাতে বলায় হামলা যুবদলকর্মী নিহত

আ.লীগের এমপির ব্যানার সরাতে বলায় হামলা যুবদলকর্মী নিহত

স্থানীয় একটি বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে টানানো ছিল আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যের ছবিসংবলিত ব্যানার। ইউনিয়ন যুবদলের একটি অংশের নেতা সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে ডেকে সেটি সরাতে বলেন। এরপর অনুসারীদের নিয়ে সেখান থেকে ফেরার পথে ওই যুবদল নেতা ও তার অনুসারীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তর্কাতর্কি হয় স্থানীয় বিএনপির আরেকটি পক্ষের নেতাকর্মীদের সঙ্গে। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে ওই যুবদল নেতা ও তার অনুসারীদের ওপর হামলা করা হয়। এসময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক যুবদলকর্মী নিহত হন। আহত হন আরও তিনজন। গত শনিবার রাতে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের আমির হাটবাজারে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত যুবদলকর্মীর নাম মোহাম্মদ কমর উদ্দিন (৩২)। তিনি হলদিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর সর্তা গ্রামের মুহাম্মদ আলীর ছেলে। তিনি দুই সন্তানের বাবা। আহত ব্যক্তিরা হলেন জামাল উদ্দিন তালুকদার (৪০), ওসমান গণি (৩৯) ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন (৪১)। তারা সবাই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত ৯টার দিকে জামাল উদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে কমরসহ ইউনিয়ন যুবদলের নেতাকর্মীদের একটি দল আমিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ে যান। সেখানে স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিমের ছবিসংবলিত ব্যানার টানানো দেখে তা সরাতে বলেন জামাল উদ্দিন তালুকদার। সেখান থেকে বের হয়ে কিছুদূর যেতেই দলের প্রতিপক্ষের ২০ থেকে ৩০ জন নেতাকর্মী জামাল উদ্দিন তালুকদার ও তার অনুসারী নেতাকর্মীদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এসময় চারজন আহত হন। এর মধ্যে কমর উদ্দিনকে আহত অবস্থায় গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হামলায় আহত ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন হাসপাতাল থেকে মুঠোফোনে বলেন, উপজেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা হয়েছে। কমরের মাথায় তিনটি দায়ের কোপ এবং পেটে দুটি ছুরিকাঘাত করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মহিউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি পরে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সেখানে গিয়ে দেখি ৫০ থেকে ৬০ মানুষের মধ্যে মারামারি হচ্ছে। তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। শুনেছি এর আগের রাতেও একই ধরনের ঝামেলা হয়েছিল।’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হলদিয়া ইউনিয়নে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে স্থানীয় সর্তা নদী থেকে বালু তোলা এবং পাহাড়-টিলা ও কৃষিজমির মাটি কাটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছে। রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলমা ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে টানানো সাবেক সংসদ সদস্যের ছবিসংবলিত ব্যানার সরানো নিয়ে স্থানীয় মহিউদ্দিন নামের এক বিএনপি নেতার অনুসারীদের সঙ্গে একই দলের আরেকটি পক্ষের মধ্যে মারামারিতে একজন নিহত হয়েছেন। দুটি পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ ছিল। তিনি আরও বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত