গ্যাসের মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণ, এমনটাই দাবি করেছেন গবেষকরা। নতুন গবেষণা বলছে, দূরবর্তী বিভিন্ন গ্রহে থাকা গ্যাসের মধ্যে ভিনগ্রহের প্রাণী খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। আর এসব গ্রহের পরিবেশ পৃথিবী থেকে একেবারেই ভিন্ন। ভিনগ্রহের প্রাণ সন্ধানের সম্ভাব্য জায়গা হিসেবে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন গ্যাসকে এতোদিন ধরে উপেক্ষা করে এসেছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট। এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্যাসের মধ্যে ভিনগ্রহী প্রাণী খোঁজের বিষয়টি তুলনামূলক সহজ ও দ্রুত পরীক্ষা করা যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এক্সোপ্ল্যানেট বা বাইরের গ্রহ পর্যবেক্ষণ করেও ও তা পরীক্ষা করতে পারেন তারা। এসব গ্যাস হচ্ছে মিথাইল হ্যালাইড।
পৃথিবীতে এসব গ্যাসের মধ্যে সাধারণত ব্যাকটিরিয়া, ছত্রাক বা এ ধরনের অণুজীব তৈরি হয়। একটি হ্যালোজেন পরমাণুর সঙ্গে কার্বন ও হাইড্রোজেন পরমাণু দিয়ে তৈরি হয় মিথাইল হ্যালাইড। পৃথিবীর মতো গ্রহতে মিথাইল হ্যালাইড গ্যাস খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে না। কারণ, এগুলো ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে দেখতে পাওয়ার জন্য খুব ছোট ও আবছা রকমের। তবে এসব গ্যাস খুঁজে পাওয়ার জন্য সম্ভাব্য জায়গা হতে পারে ‘হাইসিয়ান’ নামে পরিচিত অন্যান্য গ্রহ।
পৃথিবীর মতো নয় এমন গ্রহে বায়ুমণ্ডলীয় পরিবেশ ও টেলিস্কোপের সীমাবদ্ধতার কারণে বায়োসিগনেচার বা জৈব স্বাক্ষর শনাক্ত করা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে এলিয়েন খুঁজে পাওয়ার জন্য আরও স্পষ্ট সংকেত দিতে পারে হাইসিয়ান প্রকৃতির গ্রহ বলেছেন এ গবেষণার সহ লেখক ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া রিভারসাইড’-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডি শোইটারম্যান। ‘আমরা জানি না, এ ধরনের গ্যাসের মধ্যে প্রাণের যে রূপ তৈরি হবে তা কেমন হবে। তবে ভিনগ্রহের প্রাণ সম্পর্কে আমাদের আগের ধারণা থেকে এগুলো পুরোপুরি আলাদা রকমের হতে পারে।
‘এসব গ্যাসে অণুজীবের খোঁজ মিললেও তা অ্যানেরোবিক প্রজাতির ব্যাকটিরিয়া হবে, যা একেবারেই ভিন্ন এক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবে ও বেড়ে উঠবে। তাই আমরা সত্যিই কল্পনা করতে পারি না, এগুলো দেখতে আসলে কেমন হবে। কেবল এটুকু বলা যেতে পারে এসব গ্যাসের কার্যকর ফলাফলই হবে অ্যানেরোবিক,’ বলেছেন শোইটারম্যান। অ্যানেরোবিক হচ্ছে, এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া যা অল্প অক্সিজেন বা অক্সিজেন নেই এমন পরিবেশেও বেড়ে উঠতে পারে। ‘এক্সামিনেটিং দ্য পোটেনশল ফর মিথাইল হ্যালাইড অ্যাকুমুলেশন অ্যান্ড ডিটেকশনিবিলিটি ইন পসিবল হাইসিয়ান-টাইপ অ্যাটমোস্ফিয়ার্স’ শিরোনামে গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স-এ।